Home জাতীয় অনুদানের নামে প্রতারণা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা

অনুদানের নামে প্রতারণা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা



নয়ন দাস: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুদান দেয়ার নামে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র ব্যক্তিগত ও গোপন তথ্য সংগ্রহ করে প্রতারণা শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচয় দিয়ে এসব তথ্য নেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) একটি সর্তকতামূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ শিক্ষা অর্থবছরে বিশেষ অনুদান খাতে অনলাইনে আবেদন গ্রহণের অনুদান প্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারক চক্র ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল ফোনে জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন ইত্যাদি চাচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিচয় দিয়ে ফোনগুলো করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান বিষয়ে ইতোপূর্বে কাউকে ফোন দেয়া হয়নি এবং জাতীয় পরিচয়পত্র, বিকাশ নম্বর ও গোপন পিন সংক্রান্ত কোনো তথ্যও চাওয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রতারক চক্র হতে সতর্ক থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।

This image has an empty alt attribute; its file name is FB_IMG_1615029703562.jpg
এদিকে শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক কর্মচারী ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ অনুদান প্রদানের বর্ধিত সূচি প্রকাশের পর গুজব রটেছে, সরকার করোনার জন্য শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার করে টাকা দিচ্ছে। আর শিক্ষার্থীরা এই গুজবে কান দিয়ে আবেদনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রত্যয়ন পত্রের জন্য ছুটাছুটি করছে। যারাই এই গুজব শুনেছে তারা সবাই এটা বিশ্বাস করে অনলাইনে আবেদন করছে। ফটোকপি দোকানদাররা এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।
 
জানা গেছে, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০২০-২১ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটের বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এ টাকা পেতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে আবেদন শুরু হয়েছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে আবেদনের সময় দেয়া হলেও সে সময় বাড়ানো হয়েছে। ৭ মার্চের মধ্যে বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের টাকা পেতে আবেদন করতে হবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

জানা গেছে,  ২০২০-২১ অর্থবছরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মাঝে বিশেষ মঞ্জুরির টাকা বিতরণে ইতোমধ্যে নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বিশেষ মঞ্জুরীর টাকা পেতে আবেদন করতে হবে।  
সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত ও ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, দৈব দুর্ঘটনা এবং চিকিৎসার খরচের জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদান প্রাপ্তির আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, অসহায়, অস্বচ্ছল ও মেধাবী, অনাগ্রসর সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা অগ্রধিকার পাবেন।
এছাড়া দেশের সব স্বীকৃতি প্রাপ্ত বা এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেরামত ও সংস্কার, আসবাব পত্র তৈরি, খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়, পাঠাগার উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বান্ধব করার জন্য বিশেষ মঞ্জুরির অনুদানের আবেদন করা যাবে। তবে বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনাগ্রসর এলাকার অস্বচ্ছল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পাবে।
আর বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক কর্মচারিরা দুরারোগ্য ব্যাধি বা দৈব দুর্ঘটনার জন্য মঞ্জুরির আবেদন করতে পারবেন। 
অনুদানের টাকা পেতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক কর্মচারি বা শিক্ষার্থীদের ৭ মার্চের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইট থেকে (www.shed.gov.bd) অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীদের আর্থিক অনুদানের আবেদন ফরম’ বাটনে ক্লিক করে অনলাইনে আবেদন করতে বলা হয়েছে। 

অনুদান পেতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধানের আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় প্রধানের প্রত্যয়ন পত্র আবেদনে সংযুক্ত করতে হবে। শিক্ষক-কর্মচারি ক্যাটাগরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ডাক্তারি সনদ ও দৈব দুর্ঘটনার স্বপক্ষের প্রমাণ সংযুক্ত করে আবেদন করতে হবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের আবেদনের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির প্রত্যয়ন সংযুক্ত করতে হবে। 
শিক্ষক-কর্মচারি ও শিক্ষার্থীদের অনুদান বাবদ বরাদ্দের টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে পাঠানো হবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বরাদ্দের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।