বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
একের পর এক দেশ এগিয়ে আসছে ইউক্রেনের সহায়তায়। অস্ত্র ও যুদ্ধের নানা সরঞ্জাম দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স। আরও কয়েকটি দেশও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে পৌঁছে গেছে ইউরোপের বাল্টিক অঞ্চলের দেশ লিথুয়ানিয়ার সামরিক সরঞ্জাম ।
আমেরিকার পররাণ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তারা সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র ইউক্রেনে পাঠাবে। এর মধ্যে রয়েছে ট্যাংক-বিধ্বংসী জ্যাভেলিন মিসাইল, প্লেন-বিধ্বংসী ব্যবস্থা ও বডি আর্মারও।
জার্মান সরকার জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে এক হাজার ট্যাংক-বিধ্বংসী গ্রেনেড লঞ্চার এবং ৫০০টি স্টিংগার মিসাইল ইউক্রেনকে দিচ্ছে।
নেদারল্যান্ডসও ইউক্রেনকে ৫০টি ট্যাংক-বিধ্বংসী প্যানজারফস্ট-৩ অস্ত্র এবং ৪০০টি রকেট লঞ্চার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে।
এছাড়াও জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস স্লোভাকিয়ার একটি ন্যাটো দল একটি বিশেষ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইউক্রেনে পাঠানোর কথা আলোচনা করছে বলে জানা গেছে।
পড়শি দেশ লিথুয়ানিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর টুইট করে জানিয়েছে, ‘লিথুয়ানিয়ার পাঠানো সামরিক সহায়তার ইউক্রেনে পৌঁছেছে। লিথুয়ানিয়া তার প্রিয় বন্ধু ইউক্রেনকে সর্বদা সমর্থন করবে।’
রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিন: জেলেনস্কি
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনকে বাঁচাতে ইচ্ছুক যোদ্ধাদের বিদেশ থেকেও আসার আহ্বান জানান তাঁর দেশে। বলেন, যাঁরা ইচ্ছুক তাঁরা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আসুন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিন।
ইন্টারনেট হোক বা মিডিয়া, নানা জায়গায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন ইউক্রেনের প্রতি নিজেদের সমবেদনা জানিয়েছেন, জানিয়েছেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে আছেন তাঁরা। জেলেনস্কি সেই সব শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা যদি সত্যিই আমাদের পাশে থাকেন, এটাই তা প্রমাণ করার সুযোগ। আমাদের দেশে আসুন, আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করুন।
দেশের ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি পুরুষদের লড়াই করার নির্দেশ দিয়েছে ইউক্রেন সরকার। মহিলা, বৃদ্ধ ও শিশুদের সরানো হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। তবে তাদের সঙ্গে অনেক পুরুষও পালিয়ে গেছেন প্রাণের ভয়ে। আর যাঁদের ভয় নেই, দেশের জন্য প্রাণ তুচ্ছ করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন তাঁরা।
আক্রমণের শুরুর দিকেই ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছিল রাশিয়া। তা আবার পুনরুদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। ফলে রুশ আক্রমণ আকাশপথে আবার প্রতিরোধ করতে পারবে ইউক্রেন। যুদ্ধের আবহেই একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে ইউরোপের এই ছোট্ট দেশটি।
ট্রাকে চলমান শ্মশান
রুশ বাহিনীর কতজন যুদ্ধে প্রাণ হারাচ্ছে তার কোনও প্রমাণ না রাখার কৌশল পুতিন সরকারের। চলন্ত ট্রাকের মধ্যে যেমন রয়েছে যুদ্ধাস্ত্র, তেমনই তৈরি করে নেওয়া হয়েছে চুল্লি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে এমন ট্রাক। ক্ষতবিক্ষত রুশ সেনার নিথর দেহ দেখলেই ট্রাকে তুলে চুল্লিতে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সাঁজোয়া গাড়ি ছাড়াও এমন চলন্ত শ্মশান নিয়ে ইউক্রেনের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে পুতিন বাহিনী।
পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, চলমান শ্মশানের নানা ছবি ফুটে উঠেছে নেট মাধ্যমে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর গোড়া থেকেই নাকি সাঁজোয়া গাড়ির আড়ালে এমন চুল্লি সাজানো ট্রাক নেমেছিল ইউক্রেনের রাস্তায়। দাবি এমনও যে, রুশ সেনা শুধু নয় ইউক্রেনের সাধারণ মানুষজনের দেহও এই ট্রাকে ঢুকিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। কতটা নির্মম আক্রমণ হানছে রাশিয়া তা বিশ্বের কাছে গোপন রাখারই প্রচেষ্টা করছে পুতিন সরকার।