ভারতের অসমারিক বিমানের নিয়ন্ত্রক ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন(ডিজিসিএ) শুক্রবার ইঞ্জিন বদলানোর জন্য ইন্ডিগো, গো–এয়ার–র সময়সীমা বাড়িয়ে দিল৷ এই দুই সংস্থার ব্যবহারকারী ৩৬টি এয়ারবাস A320Neo এর ইঞ্জিন বদলানোর সময়সীমা বাড়ানো হল ২৪নভেম্বর পর্যন্ত ৷ এর আগে লো প্রেসার টারবাইন (এলপিটি) সহ এই ইঞ্জিন বদলানোর জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল ১৯ নভেম্বর৷
ডিজিসিএ আধিকারিক জানিয়েছেন, গো–এয়ার এতদিনে ১৩টির মধ্যে ৯টি এয়ারক্রাফ্টে পরিবর্তিত ইঞ্জিন বসিয়েছে অন্যদিকে ইন্ডিগো ২৩টি এয়ারক্রাফ্টের মধ্যে ১৫টিতে ইঞ্জিন বদলিয়েছে৷ তিনি জানান , এটা আশানিরূপ নয়৷ তবে এই কাজটি অত্যন্ত কঠোর এবং এ জাতীয় ইঞ্জিনগুলির আদৌ সহজলভ্য নয় সেটাও একটি বিষয় বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক৷ ফলে ইঞ্জিন বদলানোর সময়সীমা বাড়ানো হল ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত৷
তিনি আরও জানান , ইন্ডিগোর সমস্ত ইঞ্জিন বদলানোর জন্য সময়সীমা রয়েছে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ৷ সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরেও এই নির্দেশ না মানলে বিমানের গ্রাউন্ডিং ব্যহত হবে বলে তিনি জানান। গত ১ নভেম্বর ডিজিসিএ ইন্ডিগো–কে জানিয়েছিল তার ৯৭টি এয়ারবাসের ইঞ্জিন বদলাতে হবে ২০২০ সালের জানুয়ারির মধ্যে৷ শুধুমাত্র গো–এয়ার এবং ইন্ডিগো এদেশে এই ধরনের বিমান চালায় A320 এয়ারক্রাফ্ট৷ গো–এয়ারের ৩৮টি এই A320 এয়ারক্রাফ্ট রয়েছে যেখানে ইন্ডিগোর রয়েছে ৯৮ এই A320 বিমান ৷
দেশের অন্যতম বিমান পরিষেবা সংস্থা ইন্ডিগো সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে৷ বিমান পরিষেবা ক্ষেত্রে যাত্রী সংকোচন, খরচ বৃদ্ধি এবং সার্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার দরুন এমনটা ঘটেছে৷
এই বিমান পরিষেবা সংস্থা ইন্টার গ্লোব অ্যাভিয়েশন লিমিটেডের সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ১০৬৬ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে যেখানে গত বছর ওই সময় ক্ষতি হয়েছিল ৬৫২ কোটি টাকা৷
খরচ ২৭.৬ শতা্ংশ বেড়ে ৯৫৭৭ কোটি টাকা হয়েছে৷এয়ারক্রাফ্ট রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতির জন্য খরচ দ্বিগুণ হয়ে ১৫৩ কোটি টাকা হয়েছে৷তাছাড়া অবচিতি ও অন়্যান্য খরচ দাঁড়িয়েছে ১০২৯ কোটি টাকা৷তবে বিমান জ্বালানি খরচ বেড়েছে সামান্যই ২.৬ শতাংশ যা এক বছর আগে বেড়ে ছিল ৮৪ শতাংশ৷
এমন আর্থিক ফলাফল বেরিয়েছে যখন এই ইন্ডিগোর দুই প্রতিষ্ঠাতা রাকেশ গাঙ্গোয়ার এবং রাহুল ভাটিয়ার মধ্যে সংঘাত বাড়ছে৷যার ফলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা এই বিমান সংস্থায় উচ্চস্তরে সিদ্ধান্তে বাধা হয়ে দাঁড়াবে৷ এই ক্ষতি এল যখন এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বৃদ্ধির হার ছয় বছরে সবচেয়ে কম এবং অন্তর্দেশিয় যাত্রী বৃদ্ধি হার ব্যহত হয়েছে৷
গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় এবারে বিমান যাত্রী ভারতে বেড়েছে ১.২ শতাংশ যা মার্চের পর সবচেয়ে কম এবং গত পাঁচ বছরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন৷
তবে এরপরেও ইন্ডিগোর কার্যকরী আয় ৩১শতাংশ বেড়ে ৮১.০৫ বিলিয়ন টাকা হয়েছে কারণ গুরুগ্রাম ভিত্তিক এই উড়ান সংস্থা নতুন নতুন গন্তব্যের জন্য যাত্রী সংখ্যা বাড়িয়েছে৷ আর্থিক বেহাল দশার জন্য জেট এয়ারওয়েজ বন্ধ হওয়ায় এই বছর ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেট দুটি বিমান সংস্থার সুবিধা হয়েছে কারণ ওই বন্ধ হওয়া উড়ানের যাত্রীরা ফিরে আসায়৷