বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
শেষমেশ কোনও চেষ্টাই কাজে লাগল না। অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন ইমরান খান তথা তেহরিক ই পাকিস্তানের নেতৃত্বে জোট।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শনিবারের মধ্যে পাকিস্তানে আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল। রাত প্রায় ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। চরম নাটকীয় ভাবে এরপর স্পিকার আসাদ কাইসার এবং ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি পদত্যাগ করেন। এরপর পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির চেয়ার প্যানেলের সদস্য আয়াজ সাদিক স্পিকারের দায়িত্ব সামলান। মধ্যরাতের আগেই তিনি আস্থা ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরই মাঝে মধ্যরাতে দুই মিনিটের জন্য অধিবেশন মুলতুবি করে রবিবার ফের শুরু হয় নয়া অধিবেশন।
রবিবার ভোর রাতে ১৭৪-০ ভোটের ব্যবধানে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, ৩৭২ আসন বিশিষ্ট পাক অ্যাসেম্বলিতে ম্যাজিক ফিগার ১৭২। এরপরই ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত করা হয়। এর আগে ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফের সদস্যরা অ্যাসেম্বলি ত্যাগ করেন।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকটের মাঝেই মধ্যরাতে দরজা খোলা হয় পাক সুপ্রিম কোর্টের। পাক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী আস্থা ভোট না হলে ইমরান খান, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ জারি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে গভীর রাতে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করে আসেন স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার। ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাত হয় পাক সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার। এরপর পাক স্থানীয় সময়ে রাত সাড়ে ১১টায় অ্যাসেম্বলি ভবনে পৌঁছান স্পিকার আসাদ কাইসার। ততক্ষণে পাক অ্যাসেম্বলির বাইরে প্রিজন ভ্যান মোতায়েন করা হয়। এই আবহে ইমরানের চাপের মুখে স্পিকার পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের মুহূর্তে স্পিকার বলেন, ‘৩০ বছর ধরে ইমরান খানের সঙ্গে আছি। ছাত্র অবস্থায় পিটিআই-তে যোগ দিয়েছি। কীভাবে আস্থা ভোটের নির্দেশ দেই!’ পাশাপাশি তিনি ইমরান খানের ‘ষড়যন্ত্রে’র তত্ত্বের উপর জোর দিয়ে একটি সাদা কাগজ দেখিয়ে দাবি করেন, এতেই প্রমাণ রয়েছে যে ‘বিদেশি শক্তি’ পাক সরকারের পতনের নেপথ্যে রয়েছে।
এদিকে আস্থা ভোট থেকে শুরু হতেই প্রথম ভোট দেন পাকিস্তানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আসিফ আলি জারদারি। এরপর একে একে আরও ১৭৩ জন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি সদস্য অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। এরই মাঝে ইমরান খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ সরকারি বাসভবন ছেড়ে চলে যান। অ্যাসেম্বলিকে ভোটাভুটির ফল প্রকাশ হতেই শেহবাজ আহমেদ বলেন, ‘পাকিস্তানে নতুন ভোর হতে চলেছে।’