ঢাকা: ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়ার সংকটে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, পরিবহন ব্যয়, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে ব্যবসা পরিচালনার খরচ বেড়েছে। মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। এই দুঃসময়ে পাইকারি পর্যায়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে।
সম্প্রতি পাইকারি বিদ্যুতের দাম ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি। তবে গ্যাস নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে শনিবার ঢাকার মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এফবিসিসিআই।
সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সময় এখন নয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘দাম বৃদ্ধির এখন সঠিক সময় না। অন্তত ছয় মাস সময় নিয়ে বিশ্ব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা দরকার। এখন দাম বাড়ালে উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। দেশীয় শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে।’
বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, কুইক রেন্টালের একসময় প্রয়োজন ছিল। এখন আর তার প্রয়োজনীয়তা নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করা উচিত। অদক্ষ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ করা উচিত। গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। সরকার সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সরকারের ভুল পরিকল্পনার খেসারত শিল্প খাত বহন করতে পারে না। তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি হবে সরকারের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।
আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে এখন সরকারের উচিত হবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার আনা। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে অহেতুক খরচ কমিয়ে আনা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়বে কি না, এ সিদ্ধান্ত আসতে হবে রাজনৈতিকভাবে; আমলাদের থেকে নয়।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিটিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএ’র সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ অন্যরা।