বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনা অতিমহামারীর পরে ফের নতুন ভাইরাসের সংক্রমণে ঘুম উড়েছে বিশ্ববাসীর। গুটিবসন্ত যে ভাইরাসের কারণে হয়, এটিও তেমনই। তবে ধীরে ধীরে এই ভাইরাসের সংক্রামক ক্ষমতাও বেড়ে চলেছে। নিত্য় নতুন উপসর্গ ধরা পড়ছে। মানুষের শরীরে সংক্রমণ ছড়ানোর নতুন কৌশল শিখে নিচ্ছে ভাইরাস। আর তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থার (হু)। ইউরোপে এখনই আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক। ভাইরাস ছড়িয়েছে আমেরিকা, কানাডাতেও। করোনার পরে মাঙ্কিপক্স নতুন করে মহামারী বয়ে আনবে কিনা সে নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শুরুটা ব্রিটেন দিয়ে হয়েছিল। দু’বছর আগে আমেরিকায় এক জনের শরীরে মিলেছিল ভাইরাস। তবে এর পরে আর সংক্রমণ ছড়ায়নি (। মূলত আফ্রিকা, নাইজেরিয়াতে এই ভাইরাসের সংক্রমণের খবর পাওয়া যেত এতদিন। এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে। বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেনে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্পেনে আজই নতুন ২৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বাড়ছে আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াতেও। উদ্বিগ্ন হু সতর্কতা জারি করেছে।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস Orthopoxvirus genus পরিবারের। গুটিবসন্ত যে গোত্রের ভাইরাস থেকে হয় মাঙ্কিপক্সও সেই গোত্রেরই। এই ভাইরাসের সংক্রমণেও জ্বর, সারা গায়ে বড় বড় ফোস্কার মতো র্যাশ বের হবে । ত্বক শুকিয়ে খসখসে হয়ে যাবে, প্রচণ্ড চুলকানি, জ্বালা হবে র্যাশের জায়গায়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৃত প্রাণীর মাংস, মলমূত্র থেকে ছড়ায় ভাইরাস। আফ্রিকার রডেন্ট বা ইঁদুর জাতীয় প্রাণীই এই ভাইরাসের বাহক। ১৯৫৮ সালে আফ্রিকার এক প্রজাতির বাঁদরের মধ্য়ে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল, তখনও মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেনি। ১৯৭০ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও নাইজেরিয়াতে এই ভাইরাস প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় মানুষের শরীরে।
চিন্তার ব্যাপার হল যৌনমিলনেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে বলে সতর্ক করা হচ্ছে। বিশেষ করে সমকামী পুরুষ, বাইসেক্সুয়ালদের মধ্য়ে সংক্রমণ বাড়ছে। আমেরিকা, কানাডায় গে পার্টি থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে। মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিতের সঙ্গে কোনও রকম শারীরিক সম্পর্কে কেউ জড়ালে, দ্বিতীয়জন সংক্রমিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ভাইরাসের ইনকিউবেশন পিরিয়ড ২-৩ দিন। সংক্রমণ ছড়ানোর তিন দিনের মাথায় ধূম জ্বর আসবে রোগীর। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর হতে পারে। সেই সঙ্গেই সারা শরীরে বড় বড় ফোস্কার মতো র্যাশ বের হবে । ত্বক শুকিয়ে খসখসে হয়ে যাবে, প্রচণ্ড চুলকানি, জ্বালা হবে র্যাশের জায়গায়। একই সঙ্গে অসহ্য় মাথাব্যথা, পেশির খিঁচুনিও হতে পারে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রায় দুই থেকে চার সপ্তাহ ভোগাবে এই রোগ।