বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোখার সাধারণ ওষুধকেই করোনা প্রতিরোধী করে তৈরি করছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। বিজ্ঞানীদের দাবি, ওই ওষুধই হয়ে উঠবে জীবনদায়ী। সংক্রমণজনিত রোগে মৃত্যু ঠেকাবে। ভাইরাসের প্রতিলিপি তৈরির ক্ষমতা নষ্ট করবে।
যে কোনও রকম প্যাথোজেনের সংক্রমণ ঠেকানোর ওষুধ নিয়েই গবেষণা করছেন অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা। নতুন ওষুধ কী থেকে তৈরি হবে তা এখনও বিস্তারিত না জানালেও, বিজ্ঞানীরা বলছেন, আইভারমেকটিন নামে ড্রাগ থাকবে এই নতুন ওষুধের ফর্মুলায়।
আইভারমেকটিন কী? প্যারাসাইটের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য এই ওষুধের থেরাপি করেন ডাক্তাররা। বহু পুরনো ওষুধ। ১৯৭৫ সালে তৈরি হয়েছিল। ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি ওষুধের তালিকায় এই ওষুধটিও ঢুকে পড়ে। মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এই ওষুধকে অ্যান্টিপ্যারাসাইট এজেন্ট বলে উল্লেখ করেছে।
অক্সফোর্ড জানিয়েছে, নতুন যে ওষুধ তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে এই ড্রাগের ফর্মুলাও থাকবে। নতুন ওষুধের কাজ হবে সার্স-কভ-২ ভাইরাসের রেপ্লিকেশন বা বিভাজন ক্ষমতাকে থামিয়ে দেওয়া। মানুষের দেহকোষে ঢুকে এই ভাইরাস তার প্রতিলিপি তৈরি করে সংখ্যায় বাড়তে থাকে। নতুন ওষুধ এই প্রতিলিপি তৈরির প্রক্রিয়াকেই থামিয়ে দেবে। পাশাপাশি, কোষের মধ্যে ভাইরাসের ঢুকে পড়ার রাস্তা বন্ধ করে দেবে।
ইন্টার্ন ভার্জিনিয়া মেডিক্যাল স্কুলের গবেষক পল মারিক বলেছেন, যে কোনও অ্যান্টিভাইরাল ড্রাগের মতোই কাজ করবে এই ওষুধ। প্রদাহজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে। করোনা সংক্রমণে তীব্র প্রদা বা ইনফ্ল্যামেশনের কারণেই নানা জটিল রোগ হচ্ছে। কোষ থেকে সাইটোকাইন প্রোটিনের ক্ষরণ বেশি হচ্ছে। যে কারণে বিভিন্ন অঙ্গে প্রদাহজনিত রোগ হচ্ছে। সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপেরিটারি সিন্ড্রোমের কারণও তাই। এই ওষুধ ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করবে বলেই দাবি বিজ্ঞানীর।
করোনা চিকিৎসায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি নিয়েও কাজ করছে অক্সফোর্ড। ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) তত্ত্বাবধানে এই ওষুধ তৈরি করেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং রিজেনারেশন ফার্মাসিউটিক্যালস। গবেষকরা বলছেন ভাইরাসের মোকাবিলায় মানুষের শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় তার মধ্যে দুটি অ্যান্টিবডিকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এই জোড়া অ্যান্টিভাইরাল অ্যান্টিবডির মিশ্রণে ককটেল ড্রাগ তৈরি হয়েছে, এর নাম রিজেনারেশন-কভ২ (REGN-COV2) । এই অ্যান্টিবডি ককটেলের সেফটি ট্রায়ালে ভাল পাওয়া গেছে বলে দাবি। হাসপাতালে ভর্তি সঙ্কটাপন্ন কোভিড রোগীদের উপর এই ড্রাগের প্রয়োগ করা হবে। তিন পর্যায়ের ট্রায়াল শেষে রিপোর্ট সামনে আনা হবে।