বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
গত কয়েক মাস ধরে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টের কবলে পড়েছে ফ্রান্স। শুক্রবার ফরাসি সরকারের শীর্ষস্থানীয় এক মেডিক্যাল অ্যাডভাইসার বলেন, চলতি বছরের শীতেই সম্ভবত করোনার নতুন ভ্যারিয়ান্ট সৃষ্টি হবে। সেই ভ্যারিয়ান্ট কতদূর বিপজ্জনক হবে, এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় কোভিড ১৯-এর অভিযোজিত হওয়ার ক্ষমতা সীমিত।
ফরাসি সরকারের বিজ্ঞান পরিষদের সদস্য জঁ ফ্রাঙ্কো দেলফ্রাইসি বলেন, “সম্ভবত শীতে করোনার কোনও নতুন ভ্যারিয়ান্ট আসবে।” এক টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে ২০২২ এমনকি ২০২৩ সালও হয়ে যেতে পারে। ততদিন সকলের মাস্ক পরা উচিত। সামাজিক দূরত্বও মেনে চলা উচিত।
পরে তিনি বলেন, “আগামী কয়েক বছরে আমাদের একটি বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। তখন দু’ধরনের দেশ থাকবে। এক ধরনের দেশে বেশিরভাগ মানুষের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে যাবে। আর এক ধরনের দেশে ভ্যাকসিন নেওয়া হবে না অনেকেরই।”
সম্প্রতি ফ্রান্সের সরকার নির্দেশ দিয়েছে, সিনেমা হলে, মিউজিয়ামে বা স্টেডিয়ামে ঢুকতে হলে কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রমাণপত্র আনতে হবে। অথবা আনতে হবে কোভিড নেগেটিভ টেস্টের প্রমাণ। ভ্যাকসিন বা কোভিড নেগেটিভ হওয়ার প্রমাণপত্রকে বলা হচ্ছে হেলথ পাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিডের চতুর্থ ওয়েভের মুখে দাঁড়িয়ে আছে ফ্রান্স। প্রধানমন্ত্রী জঁ কাসটেক্স বলেছেন, যাঁরা নতুন করে কোভিডে সংক্রমিত হচ্ছেন, তাঁদের কেউই ভ্যাকসিন নেননি। কাসটেক্স টিভিতে ভাষণে বলেছেন, তাঁরা চেষ্টা করছেন যাতে দেশ জুড়ে লকডাউন না করতে হয়। যাঁরা এখনও ভ্যাকসিন নিতে চাইছেন না, তাঁদের নিন্দা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভিয়ার ভেরান। তিনি সংসদে বলেন, “স্বাধীনতার নামে কেউ যদি ট্যাক্স না দিতে চায়, রাস্তার ভুল দিক দিয়ে গাড়ি চালায়, রেস্তোরাঁয় সিগারেট খায় অথবা ভ্যাকসিন না নিতে চায়, তাকে সমর্থন করা যায় না।”
এখনও পর্যন্ত ফ্রান্সের নাগরিকদের ৫৬ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪৬ শতাংশকে দু’টি ভ্যাকসিনই দেওয়া হয়েছে। সরকার এবারের গ্রীষ্মের মধ্যেই ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে চায়।
গত সপ্তাহে সরকারের ভ্যাকসিন নীতির বিরুদ্ধে পথে নামেন হাজার হাজার ফরাসি নাগরিক। তাঁদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাকরঁ ভ্যাকসিন নিয়ে ‘একনায়কত্ব’ চালাচ্ছেন। মাকরঁ-র নিজের দল রিপাবলিক অন দ্য মুভ-এর কয়েকজন সাংসদও বলেছেন, সরকারের ভ্যাকসিন নীতি নাগরিক স্বাধীনতার পক্ষে ক্ষতিকারক।