Home করোনা আপডেট করোনা: বাড়ছে হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরতের সংখ্যা

করোনা: বাড়ছে হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরতের সংখ্যা


বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: বন্দরনগরীতে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। দুই মাস আগেও যেখানে এক দিনে মাত্র তিনজন শনাক্ত হয়েছিল, সেখানে এখন প্রতিদিনই শনাক্ত হচ্ছে পাঁচশর ওপরে। 
এ হিসাবে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে প্রায় ১৫০ গুণ। শনাক্তের হার প্রতিদিনই গড়ছে নতুন রেকর্ড, বাড়ছে মৃত্যুও।

রবিবার (১১ এপ্রিল) এক দিনেই এ যাবৎকালের সব রেকর্ড ভেঙে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৭ জনের।

করোনা শনাক্ত বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালেও চাপ বেড়েছে। এ অবস্থায়ও মাস্ক পরতে ও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে উদাসীন বেশিরভাগ মানুষ।

এদিকে চট্টগ্রামে প্রথম করোনা শনাক্তের একবছরেও আইসিইউ শয্যা বাড়ানো সম্ভব হয়নি একটিও। যে কারণে প্রতিদিন শনাক্ত বাড়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। নতুন আইসোলেশন ও হাসপাতাল বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

আর এত সংকটের মাঝে করোনা শনাক্ত বাড়ায় স্বভাবতই রোগী ও স্বজন তাদের, চিকিৎসা সংশ্নিষ্ট ব্যক্তি এবং সাধারণ মানুষদের অনেকে প্রশ্ন তুলছেন- এত রোগী যাবে কোথায়, চিকিৎসাসেবাই বা তারা পাবে কিভাবে।

চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৮৬০ জন; মারা গেছেন ৪৩০ জন। মহানগরের বেসরকারি ২০টি হাসপাতালের ৮৩ আইসিইউ শয্যার বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৭১ রোগী ভর্তি আসে। একইভাবে সরকারি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ১০ আইসিইউ শয্যায় সবক’টিতে এবং করোনা রোগীদের প্রধান ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতালের ১০টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ৯টিতেই ভর্তি আছেন রোগী।

সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০টি বেসরকারি হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি আছে ৪১৯ জন। আর করোনা সন্দেহভাজন ভর্তি আছে ১৬৫ জন। হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সেবা দেওয়া হচ্ছে ৫০ রোগীকে। নগরের তিনটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ৩১ জনকে ফেরত দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নগরের সিএসটিসি হাসপাতাল একাই ২৩ জনকে চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত দিয়েছে। আর ডেল্টা হাসপাতাল পাঁচজনকে ও ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল তিনজন রোগীকে ফেরত দিয়েছে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৭ জনের মধ্যে চারজন মহানগরীর এবং তিনজন অন্যান্য উপজেলার বাসিন্দা। গত বছরের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ৯ এপ্রিল ঘটে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। শনাক্তদের মধ্যে বেশি মারা যাচ্ছে পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা।

এক বছর আগে জেনারেল হাসপাতালে নতুন আটটি আইসিইউ শয্যা চালু করার ঘোষণা দিলেও তা হয়নি। গত ৮ এপ্রিল সেসব আইসিইউ শয্যা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলেও রোগী ভর্তির জন্য এখনও প্রস্তুত হয়নি। রয়েছে চিকিৎসক ও নার্স সংকটও।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় সার্ভেইল্যান্স টিমের প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, চট্টগ্রামে আশঙ্কাজনক হারে রোগী বাড়ছে। তবে কাঙ্ক্ষিতভাবে বাড়েনি আইসিইউ শয্যা। যাবতীয় বিষয় নিয়ে আজকালের মধ্যে সবাইকে নিয়ে জরুরি বৈঠবে বসব।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম হুমায়ুন কবির বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, ১০টি আইসিইউ শয্যার সবটাতেই প্রতিদিন রোগী থাকছে। এর বাইরে ১৫টির মতো বিছানায় আমরা হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়ে রোগীদের অক্সিজেন দিতে পারছি। আইসিইউ শয্যার জন্য প্রতিদিনই অনেকে যোগাযোগ করলেও দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. আবদুর রব বলেন, ‘দ্রুত রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসাসেবার পরিধিও বাড়াতে হবে।’ 

মা ও শিশু হাসাপাতালের আজীবন সদস্য ফোরামের সদস্য সচিব বলেন, ১০টি আইসিইউ ও ছয়টি এইচডিইউতে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকছে। অনেকে শয্যার জন্য যোগাযোগ করলেও খালি না থাকায় দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।