জাতীয় কভিড ব্যবস্থাপনা কমিটি, জেলা ও উপজেলা কভিড ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যক্রমের দৃশ্যমান অগ্রগতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, স্থানীয় চাহিদা ভিত্তিতে করনীয় নির্ধারন, সরকারি প্রণোদনা ও ত্রাণ বিতরণের তালিকা প্রণয়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল ) গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান উপরোক্ত দাবি জানান।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন ২০২০ সালে করোনায় লকডাউন চলাকালে সরকার জেলা-উপজেলা পর্যায়েও কভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের নির্দেশ দিলে স্থানীয় প্রশাসন তাদের নিজেদের অনুগত, পোষ্য ও সমর্থকদের নাম দিয়ে কমিটির তালিকা তৈরী করে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করলেও কার্যত এই কমিটি কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ ছিলো। লকড ডাউন চলাকালীন ত্রাণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, চিকিৎসা, প্রণোদনাসহ করোনা মহামারী প্রতিরোধ কার্যক্রমে এই কমিটির কোন তৎপরতা বা কোন কার্যক্রম গ্রহন বা কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো কিনা জানা যায়নি। আর কমিটির সভাপতি কর্তৃক বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজনকে নিয়োগের বিধান থাকায় কমিটির সভাপতির নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করা হয়। সেকারনে অনেকে নিজের সন্তান, স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনকে এ সমস্ত কমিটিতে বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি বানিয়ে কমিটি গঠন করেন। যার চুড়ান্ত পরিণতিতে এই কমিটি কাগজেই সীমিত থাকে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন কোভিড- ১৯ এর চিকিৎসা কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি উপকরণ, পিপিই ও অন্যান্য কেনাকাটায় স্বাস্থ্যখাতে অবারিত দুর্নীতির ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর উদ্যোগ দরকার। একই সাথে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী-,মাস্ক, পিপিই বিতরণে যে রকম হজবরল অবস্থা ও নানারকম অনিয়ম হয়েছিলো, তা রোধে কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে করোনার দ্বিতীয় ডেউয়ের আক্রমণ শুরু হলেই আবার হাসাপতালে শয্যা, আইসিইউ সংকট প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন করোনা একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা বিগত ০১ বছরে কোন সভা অনুষ্ঠান বা এ ব্যপারে কোন কার্যক্রম গৃহিত হবার সংবাদ নেই। সেকারণে জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যত মৃত। অথচ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যাগুলি সমাধানে স্থানীয় উদ্যোগে করনীয় নির্ধারন ও প্রয়োজনীয় বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদানের জন্য এই কমিটি গঠিত হলেও ফলাফল শুন্য। এখন সব বিষয়ের জন্য মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর দৃষ্ঠি আকর্ষণ ও হস্তক্ষেপ ছাড়া কোন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
বিবৃতিকে ক্যাব নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ভোক্তা সরক্ষন আইন ২০০৯ অনুসারে ক্যাব দেশের ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন এবং এফবিসিসিআই ও ওষুধ শিল্প সমিতি দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। সরকারের জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কমিটি গঠনের সময় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি হিসাবে বিভিন্ন চেম্বার ও এফবিসিসিআই’র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হলেও ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসাবে কমিটির সভাপতির অনুগত ও পোষ্য একজনকে মনোনিত করা হয়। যার কারনে ভোক্তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয় না। ।