বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মার্কিন-আফগান বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে তাদের নাকের ডগাতেই দিনের পর দিন আফগানিস্তানেই ঘুরে বেড়িয়েছেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ ।
পাকিস্তানের দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে খোলাখুলি একথা জানিয়ে তার কৃতিত্ব নিয়েছেন তিনি। তালিবান আফগানিস্তান দখলের পর সশরীরে সাংবাদিক বৈঠক করেন জাবিউল্লাহ। উপস্থিত সাংবাদিকরা বিশ্বাসই করতে পারেননি, তিনি জাবিউল্লাহই। তাঁরা ভাবতেন, জাবিউল্লাহ নামে আদতে কেউ নেই, একটি কাল্পনিক চরিত্র। ঘটনাচক্রে এই ধারণার ফায়দা তুলেই মার্কিন, আফগান বাহিনীর চোখের সামনেই কাবুলে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিয়েছেন জাবিউল্লাহ।
তিনি বলেছেন, কাবুলে সবার নাকের ডগায় দীর্ঘদিন কাটিয়েছি। সীমান্তেও সুযোগ পেয়ে গিয়েছি, যেখানে তালিবান অপারেশন চালাত, একেবারে টাটকা খবরও পেতাম। আমাদের শত্রুদের এটা বিভ্রান্ত করত।
তিনি এতবার মার্কিন, আফগান বাহিনীকে ফাঁকি দিয়েছেন যে, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, জাবিউল্লাহ মুজাহিদ একটি ভৌতিক চরিত্র, সত্যিকারের মানুষ নয়, বলেছেন তালিবান মুখপাত্র।
তিনি কখনও আফগানিস্তান ছাড়েননি বলে জানিয়েছেন ৪৩ বছর বয়সি নেতা। বলেছেন, ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রে যোগ দিতে এত জায়গায়, এমনকী পাকিস্তানে পর্যন্ত গিয়েছেন, কিন্তু মার্কিন-আফগান বাহিনীর লাগাতার তল্লাশি সত্ত্বেও কোনওদিন ভাবেননি, চিরতরে দেশ ছাড়বেন। তাঁর গতিবিধির ব্যাপারে খবর জোগাড় করতে স্থানীয় লোকজনকে অনেক পয়সা দিত মার্কিন বাহিনী, কিন্তু কোনও না কোনওভাবে তাদের রাডার এড়িয়ে যেতেন তিনি, জানিয়েছেন জাবিউল্লাহ।
শৈশবে তিনি সাধারণ স্কুলেই ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে পরে মাদ্রাসায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তিনি ধর্মীয় শিক্ষার দিকে চলে যান। খাইবার পাখতুনখোয়ার নাওশেরায় হক্কানিদের ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্রে তিনি ছিলেন। তালিবানে নাম লেখান ১৬ বছর বয়সে, তবে কখনও নাকি তার প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরকে দেখেননি।
তাঁর কোনও অস্তিত্বই নেই, এমন প্রতিষ্ঠিত ধারণা সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত করেন, জাবিউল্লাহ তাঁর আসল নাম। তবে তালিবানে সিনিয়ররা তাঁকে মুজাহিদ বলে ডাকা শুরু করেন।
কাবুল দখলের পর একটা উদার ভাবমূর্তি তুলে ধরার চেষ্টা করে তালিবান, সাংবাদিক সম্মেলন করে, যাতে সামনে আসেন জাবিউল্লাহ। গতবারের শাসনে যেমন তালিবান নেতারা আড়ালেই থাকতেন, এবার তেমন হবে না বলে জানায় তারা। একাধিক নেতা প্রকাশ্যে মিডিয়ার মুখোমুখি হন। অন্তর্বর্তী সরকার গড়ে এখন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইছেন তাঁরা।