বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: স্থল কাস্টমস স্টেশনে অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে দেশের ৯টি স্থল কাস্টমস স্টেশনে প্রতিটিতে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করতে একমত হয়েছে এনবিআর ও এডিবি।
ফল আমদানিতে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট বসাতে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দেওয়া এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রবিবার (১৭ জানুয়ারি) প্রতিবেদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরশেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
স্থল কাস্টমস স্টেশনগুলো হল, ভোমরা, বুড়িমারি, হিলি, বাংলাবন্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবির বাজার ও টেকনাফ।
প্রতিবেদনে জানা যায়, ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি তৈরির লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করছে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এডিবির টেকনিক্যাল টিমের যাতায়াত ছয়-সাত মাস বন্ধ ছিল। এতে তাদের ফিজিবিলিটি টেস্ট এর কাজ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে পুণরায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন স্থল ও নৌ বন্দরের মাধ্যমে বিভিন্ন রাসায়নিক কেমিক্যালযুক্ত ফল আমদানি রোধের জন্য ২০১০ সালে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ রিট পিটিশন দায়ের করেন।
এই রিট পিটিশনের আলোকে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল স্থল ও নৌ বন্দরে ৬ মাসের মধ্যে কেমিক্যাল টেস্ট ইউনিট স্থাপন এবং আমদানিকৃত সকল ফলের কেমিক্যালমুক্ত তা নিশ্চিত হয়ে দেশে প্রবেশের ব্যবস্থা করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেন।
এরপর আদেশের ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চান আদালত। সে অনুসারে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে দেশের ৬টি কাস্টম হাউজ এবং ১৪টি শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে ফল আমদানির সুযোগ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও বেনাপোলের মাধ্যমে বেশিরভাগ ফল আমদানি করা হয়।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম এবং বেনাপোলে রাসায়নিক ল্যাবরেটরি রয়েছে। চট্টগ্রামে আমদানিকৃত ফল রাসায়নিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে এবং আমদানি নীতি আদেশ পালন করে চালান খালাস করা হয়।
অন্যান্য কাস্টম হাউসগুলোতে আমদানিকৃত ফল কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ অফিসের মাধ্যমে রাসায়নিক পরীক্ষা শেষে খালাস করা হয়। নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ পরীক্ষা করতে এডিবির আর্থিক সহযোগিতায় ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। এ লক্ষ্যে গঠিত কমিটি ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে এডিবির টেকনিক্যাল টিমের যাতায়াত ছয়-সাত মাস বন্ধ ছিলো। এতে তাদের ফিজিবিলিটি টেস্টের কাজ বাধাগ্রস্থ হয়েছে। তবে বর্তমানে পুণরায় পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে এবং ডিপিপির কাজ শেষ হলে জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে বলে আশা করা যায়।
১৪টি স্থল কাস্টমস স্টেশনের মধ্যে ভোমরা, বুড়িমারি, হিলি, বাংলাবন্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফের মাধ্যমে ফল আমদানি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফরমালিন টেস্ট করা হয়। এই ৯টি স্থল কাস্টমস স্টেশনে (ভোমরা, বুড়িমারি, হিলি, বাংলাবন্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফ) অবকাঠামোগত উন্নয়নে এডিবি অর্থায়নে রাজি হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রতিটিতে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনে ঐক্যমতে পৌঁছেছে।