কোরবানিদাতা নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করবেন, যদি তিনি ভালোভাবে জবাই করতে পারেন। কেননা, রাসুলুল্লাহ (স) নিজে জবাই করেছেন। আর জবাই করা আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের একটি মাধ্যম।
তবে কোরবানির পশু জবাই করার দায়িত্ব অন্যকে অর্পণ করা জায়েজ আছে। কেননা, সহিহ মুসলিমের হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স) ৬৩টি কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করে বাকিগুলো জবাই করার দায়িত্ব আলী (রা)-কে অর্পণ করেছেন। [মুসলিম, ১২১৮]
জবাই করার সময় যেসব বিষয় লক্ষণীয়: (১) যা জবাই করা হবে, তার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করতে হবে, তাকে আরাম দিতে হবে। যাতে সে কষ্ট না পায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। (২) যদি উট জবাই করতে হয়, তবে তা নহর করবে।
নহর হলো, উটটি তিন পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে আর সম্মুখের বাম পা বাঁধা থাকবে। তার বুকে ছুরি চালানো হবে। উট ছাড়া অন্য জন্তু হলে তা তার বাম কাতে শোয়াবে। ডান হাত দিয়ে ছুরি চালাবে। বাম হাতে জন্তুর মাথা ধরে রাখবে। মুস্তাহাব হলো, জবাইকারী তার পা জন্তুটির ঘাড়ে রাখবে। (৩) জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ বলতে হবে।
কারণ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন: ‘যার ওপর আল্লাহর নাম (বিসমিল্লাহ) উচ্চারণ করা হয়েছে, তা থেকে তোমরা আহার করো।’ [সুরা আনআম :১১৮] জবাই করার সময় তাকবির বলা মুস্তাহাব। যেমন হাদিসে এসেছে- জাবের (রা) থেকে বর্ণিত, একটি দুম্বা আনা হলো। রাসুলুল্লাহ (স) নিজ হাতে জবাই করলেন এবং বললেন, ‘বিসমিল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার, হে আল্লাহ! এটা আমার পক্ষ থেকে। এবং আমার উম্মতের মাঝে যারা কোরবানি করতে পারেনি তাদের পক্ষ থেকে।’ [আবু দাউদ]
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স) দুটি শিংওয়ালা ভেড়া জবাই করলেন, তখন বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার বললেন। [সুনানে দারামি, ১৯৮৮, হাদিসটি সহিহ] জবাই করার সময় বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার পাঠের পর আল্লাহুম্মা হা-যা মিনকা ওয়া লাকা (হে আল্লাহ! এটা তোমার তরফ থেকে, তোমারই জন্য) বলা যেতে পারে। যার পক্ষ থেকে কোরবানি করা হচ্ছে, তার নাম উল্লেখ করে দোয়া করা জায়েজ আছে। এভাবে বলা, ‘হে আল্লাহ! তুমি অমুকের পক্ষ থেকে কবুল করে নাও।’