Home First Lead তেল চিনি নিয়ে চালবাজি করছেন খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ী নেতা পরিবার

তেল চিনি নিয়ে চালবাজি করছেন খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ী নেতা পরিবার

  • রিয়াজউদ্দিন বাজারে গণপ্রচারণায় সুজনের কাছে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ
  • সতর্ক হোন, নতুবা মোড়ে মোড়ে ছবি সম্বলিত ব্যানার টাঙ্গানো হবে

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: রমজানের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ যথেষ্ট। কিন্তু এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না ভোক্তারা। খাতুনগঞ্জে এক ব্যবসায়ী নেতা ও তাঁর পরিবার বিশেষতঃ তেল ও চিনি নিয়ে চালবাজি করছেন।

নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বুধবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক জননেতা খোরশেদ আলম সুজনের সাথে মতবিনিময়কালে এ অভিযোগ করেন। তিনি রমজানে ভোগ্যপণ্য যাতে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে সেটা নিশ্চিত করতে বুধবার দুপুরে গণপ্রচারণা চালাতে সেখানে গিয়েছিলেন।

এসময় খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময়ে খোরশেদ আলম সুজন পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন আমরা যতটুকু জেনেছি রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যবহার্য পণ্যসামগ্রীর প্রচুর মজুদ রয়েছে বাংলাদেশে। বৈশ্বিক মন্দা বা ডলার সংকট থাকলেও আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দামের নিম্নমুখী থাকায় সে সুযোগকে ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন আমাদের দেশের আমদানিকারকগণ। সরকারের নানাবিধ উদ্যোগের কারণে রমজানের পূর্বেই ছোলা, চিনি, ভোজ্যতেল, মসুর ডাল, খেজুর ও পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না সাধারণ ভোক্তারা। এমনকি রমজানে ব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী আমদানি করে দেশে এনে খালাস না করে বহির্নোঙরে রাখা হয়েছে। এর ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চাইছেন তারা। বিভিন্ন পণ্যের ডিও বিক্রি করলেও পণ্য দিচ্ছেন না তারা। এমনকি একজন ব্যবসায়ী নেতা ও তার পরিবার তেল এবং চিনি নিয়ে চালবাজি করছেন বলেও অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের।

এসময় খোরশেদ আলম সুজন বলেন ডলার সংকটে বিদেশ থেকে রমজানে ব্যবহার্য নিত্যপণ্যসমূহের আমদানি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ত্বড়িৎ সিদ্ধান্তে রমজানে নিত্যপণ্য আমদানির সংকট কেটে গিয়েছে। আমাদেরও প্রাপ্ত তথ্য মতে এবারের রমজানে আমদানিকারকগণ প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছেন। কিন্তু তারপরও রোজাদারদের ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রী নিয়ে চালবাজি করা মোটেও কাম্য নয়। আমাদের ব্যবসায়ীগণ আমাদের সরকারেরই অংশ। ব্যবসায়ীগণ যখন যা বলছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  তা করে দিচ্ছেন। তারপরও পণ্য খালাস না করে বহির্নোঙরে জাহাজ বসিয়ে রাখা, বিভিন্ন গুদামে মাল মজুদ রেখে বাজারে সরবরাহ না করাটা অন্যায়। আমরা এসব ব্যবসায়ীদের নাম ঠিকানা সব জানি। আমরা হুশিয়ার করে বলতে চাই সরকারের যাবতীয় সুবিধাদি গ্রহণ করে জনগনের সাথে প্রতারণা করাটা বিশ্বাসঘাতকতার সামিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশাল অগ্রযাত্রাকে যারা ছলে বলে কৌশলে বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদেরকে কোনভাবেই সফল হতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি। তাই এখনই তাদের সতর্ক হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। নচেৎ নগরীর বিভিন্ন বাজার এবং মোড়ে মোড়ে তাদের ছবি সম্বলিত ব্যানার টাঙ্গানোর হুশিয়ারি দেন সুজন।

তিনি আরো বলেন রমজান মাস আসলেই আমাদের ক্রেতাদের মধ্যে একসাথে বাজার করার একটা প্রবণতা দেখা যায়। এতে করে স্বাভাবিকভাবে প্রয়োজনীয় পণ্যের উপর একটা চাপ পড়ে। আর এ সুযোগ গ্রহণ করে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীগণ। তারা সুযোগটিকে গ্রহণ করে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এবং সে সংকটকে পুঁজি করে ভোক্তাদের চরমভাবে নাজেহাল করে। তাদের নানাবিধ কৃত্রিম সংকটের কারণে সাধারণ ভোক্তাগণ চাপে পড়ে এবং তাদেরকে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে হয়ে। তাই ভোক্তাদের এক্ষেত্রে সচেতন হওয়ার আহবান জানান তিনি। তিনি ভোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন কোন একটা উৎসব আসলেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য দেখা যায়। তারা সবকিছুতে সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য ক্রয় করতে বাধ্য করে। তাই ভোক্তাদেরও সিন্ডিকেট গঠন করার অনুরোধ জানান তিনি। কারণ ভোক্তারাই হচ্ছেন বাজারের প্রধান আকর্ষণ। ভোক্তারা এক হলে কোন সিন্ডিকেটই মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। তবে আমাদের সিন্ডিকেট হবে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে, অসত্যের বিরুদ্ধে সত্যের সিন্ডিকেট। তাই ভোক্তারা যদি এক হয়ে একসাথে দুইদিনের বেশি পণ্য ক্রয় না করে তাহলে সিন্ডিকেটের সব আয়োজন ভেস্তে যাবে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বাজারে ঘুরে ঘুরে উপস্থিত ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সাথে কথা বলেন

। এসময় ক্রেতাগণ বাজারে কাদা মাটি, নোংরা, আবর্জনার বিষয়ে সুজনকে অবহিত করলে তিনি সাথে সাথে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। বাজারে আগত সকলেই সুজনের মহতী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান এবং একসাথে পণ্য ক্রয় না করার অঙ্গীকার করেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, আলী আকবর, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, নুরুল কবির, মো. শাহজাহান, সাইফুল্লাহ আনসারী, রকিবুল আলম সাজ্জী, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হাসান আহমেদ ইমু প্রমূখ।