Home সারাদেশ পুকুরে দেশি মাছের একইসঙ্গে গলদা চিংড়ি চাষ

পুকুরে দেশি মাছের একইসঙ্গে গলদা চিংড়ি চাষ

ছবি: সংগৃহীত
নয়ন দাস,কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের প্রত্যন্ত গ্রামের পুকুরে দেশি মাছের সঙ্গে চাষ হচ্ছে গলদা চিংড়ি। এতে মাছ চাষে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলেছে। সরকারি-বেসরকারি সহায়তা পেলে এভাবে গলদা চিংড়ি উৎপাদন করে অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে পিছিয়ে পড়া কুড়িগ্রাম।
 জেলার রাজারহাট উপজেলার বৈদ্যের বাজার এলাকায় পল্লব চন্দ্র রায় ৪০ শতক পুকুরে প্রথমবারের মতো কার্প, পাঙাস, সিলভার কাপসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে গলদা চিংড়ি চাষ করেছেন। প্রায় সাত মাস আগে ৬০০ পিস গলদা চিংড়ি ছাড়া হয় তার পুকুরে। মাত্র সাত মাসের মাথায় পুকুরে বড় বড় সাইজের গলদা চিংড়ি দেখে খুশি স্থানীয়রাও।
জেলায় মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ির চাষ এবারই প্রথম বলে জানা গেছে। পল্লি কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ও আরডিআরএস বাংলাদেশের সহায়তায় গলদা চিংড়ি চাষ শুরু করেন তিনি।
মৎস্যচাষি পল্লব চন্দ্র রায় বলেন, একটি চিংড়ি ৮০-৯০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হয়েছে। এর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১২০০ টাকা কেজি। এতে অন্তত লক্ষাধিক টাকা আয় হবে। এক খরচে দেশি মাছের পাশাপাশি গলদা চিংড়ি চাষ করায় খরচ তেমনটা হয়নি। সব মিলে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম সদর ও রাজারহাট উপজেলায় ১০ জন চাষি প্রায় চার একর পুকুরে ছয় হাজার পিস গলদা চিংড়ি চাষ করেছেন বলে জানা গেছে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পাঁচগাছি এলাকার মৎস্যচাষি মোজাম্মেল হক বলেন, ৩০ শতক জমিতে অন্য জাতের মাছের সঙ্গে আরডিআরএসের সহায়তায় ৬০০ পিস গলদা চিংড়ি চাষ করেছি। অন্য মাছের মতো চিংড়ি মাছও বেড়ে উঠছে। এখনও জাল টানিনি, তবে আশা করছি লাভবান হবো।
আরডিআরএস বাংলাদেশের কৃষি ইউনিট টিম লিডার বিদ্যুৎ কুমার সাহা বলেন, উত্তরবঙ্গে মৎস্যচাষিদের মধ্যে গলদা চিংড়ি চাষে আগ্রহ কম। তবে সুস্বাদু এই মাছ কুড়িগ্রামে চাষ হচ্ছে। এটি বৃদ্ধি করা গেলে আগামীতে উচ্চমূল্যের এই মাছ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি করা সম্ভব। এতে করে জেলার অর্থনীতিতে নতুন মাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মুক্তাদির খান বলেন, এর আগে জেলার বিভিন্ন মৎস্য চাষিদের গলদা চিংড়ি চাষে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে তারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে চিংড়ি চাষের দিকে ঝুঁকছে।

গলদা চিংড়ি বিশ্বে Giant Fresh water Prawn নামে পরিচিত । গলদা চিংড়ির বৈজ্ঞানিক নাম: Macrobrachium Rosenberg. | সাধারণত, গলদা চিংড়ি স্বাদু জল  ও হালকা লবণযুক্ত জলে ভালোভাবে চাষ করা যায়।গলদা চিংড়ি অত্যন্ত লোভনীয় এক খাবার। মাছ-বাজারে এই মাছের চাহিদা খুব | ক্রেতাদের লাইন পরে যায় চিংড়ি কিনতে | তাই, কৃষকদের চিংড়ি চাষে আর্থিক উন্নতিও ঘটে |

প্রাকৃতিক পরিবেশে গলদা চিংড়ি স্বাদু জল এবং ঈষৎ লবণাক্ত জলে পাওয়া যায়। তবে নদীর উঁচু অংশে যেখানে জোয়ার-ভাটার তারতম্য বেশি সেখানে এরা অবস্থান করতে বেশি পছন্দ করে। আমাদের দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ করে উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি করা সম্ভব।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আধুনিক পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ির উৎপাদন প্রতি একরে ১২০০ থেকে ২৫০০ কেজি হয়েছে। এই নিবন্ধে আধুনিক উপায়ে চিংড়ি চাষের (lobster Cultivation) বিস্তারিত আলোচনা করা হলো,