টানা ঊর্ধ্বগতির পর চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে। ক্রমবর্ধমাণ সংক্রমণের ধারায় এর আগে একটানা ৫ দিন দুই শতাধিক এবং শুক্রবার সাড়ে তিনশ’র বেশি রোগী শনাক্ত হয়। তবে শনিবার সকাল দশটা থেকে রবিবার সকাল দশটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১১০ জন আক্রান্ত পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ৭ দশমিক ২১ শতাংশ। করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় নগরীর পাঁচটি ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ও চট্টগ্রামের ল্যাবে ১ হাজার ৫২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন চিহ্নিত ১১০ জন বাহকের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৯৮ জন এবং সাত উপজেলার ১২ জন।
উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সীতাকুন্ড ও চন্দনাইশে ৩ জন করে, হাটহাজারীতে ২ জন, রাঙ্গুনিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালী ও আনোয়ারায় ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় মোট সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩৯ হাজার ২১৮ জন। এর মধ্যে শহরের ৩১ হাজার ১৩৭ জন ও গ্রামের ৮ হাজার ৮১ জন।
শনিবার চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৮৪ জনই রয়েছে। এদের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ২৮১ জন ও গ্রামের ১০৩ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭০ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা এখন ৩৩ হাজার ৮৪২ জন। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ৪ হাজার ৫৮৭ জন এবং হোম আইসোলেশেনে থেকে চিকিৎসায় সুস্থ হন ২৯ হাজার ২৫৫ জন। হোম আইসোলেশনে নতুন যুক্ত হন ২৫ জন ও ছাড়পত্র নেন ২০ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ১১৪ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, শনিবার নগরীর আটটি ল্যাবরেটরির পাঁচটিতে করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয় ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে। এখানে ৮০৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় গ্রামের ৬ জনসহ ৫৬ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৭৬ জনের নমুনায় ১৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। এরা সবাই শহরের বাসিন্দা। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ৯৮ টি নমুনার মধ্যে গ্রামের ৫ টিসহ ১৮ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ২৪ নমুনার ১০ টিতে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলে। ১০ জনই নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ২১ নমুনায় শহরের ৯ টি করোনা বাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ১ টি নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সেটিরই রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এদিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), শেভরনে ও ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে করোনার কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে বিআইটিআইডি’তে ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, চমেকে ২ দশমিক ৭৮, সিভাসু’তে ১৮ দশমিক ৩৭, আরটিআরএলে ৪১ দশমিক ৬৬ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। কক্সবাবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে শতভাগ সংক্রমণ হার পাওয়া যায়।
-বাসস।