Home চা শিল্প চা উৎপাদনে খরাপ্রবণ এলাকায় বিশেষ প্রকল্প

চা উৎপাদনে খরাপ্রবণ এলাকায় বিশেষ প্রকল্প

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম:খরাপ্রবণ এলাকায় টেকসই ও গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনের লক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার উপযুক্ত অভিযোজন কৌশল উন্নয়ন ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কৃষকদের মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দেবে সরকার।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের আওতায় তিন বছর মেয়াদে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া, হবিগঞ্জের বাহুবল, চুনারুঘাট, মাধবপুর, পঞ্চগড়ের সদর উপজেলা, তেললিয়া ও আটোয়ারী, লালমনিরহাটের কয়েকটি সম্ভাবনাময় উপজেলার চা-চাষিদের জন্য এই প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।

প্রকল্পের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উপযুক্ত অভিযোজন কৌশল উন্নয়ন করা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি কৃষকের কাছে মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে। খরাসহিষ্ণু চা চারা রোপণে উৎসাহিত করতে প্রণোদনার মাধ্যমে ২ টাকায় চা চারা পাবেন চাষিরা। পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে চা-বাগানে জলাধার নির্মাণ ও সোলার ইরিগেশন সেটের সংখ্যা বাড়ানো হবে। উত্তরাঞ্চলের ক্ষুদ্র চা-চাষিদের ইরিগেশন পাম্প ও স্প্রিংক্লার ইরিগেশনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনে চাষিদের প্লাকিং মেশিন সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া প্রকল্প এলাকার চা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, একটানা খরা, অনাবৃষ্টি ও তীব্র দাবদাহে উল্লিখিত উপজেলাগুলোতে চা চাষ ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। বৃষ্টিপাত কম হলে বাগানের চা-ঝোপে লাল পোকার আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন ঝুঁকির মুখে পড়ে। এসব সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষতির মুখে পড়ে চা-বাগান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম এনডিসি, পিএসসি গণমাধ্যমকে বলেন, চা-চাষের জন্য পানি দরকার। তবে বাগানে পানি জমে থাকা যাবে না। একই ভাবে রোদও দরকার, তবে অতিরিক্ত তাপ নয়। খরাসহিষ্ণু এলাকায় চা-চাষের জন্য এগুলো বড় সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধান করা গেলে চা উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।

তিনি আরও বলেন, ‘চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরে ১০ কোটি কেজি চাপাতা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আশা করছি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। আমরা ৬ থেকে ৮ লাখ কেজি চা রপ্তানি করতে পারব। তবে আমরা যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি তাতে উৎপাদন বাড়লে ২০২৫ সালনাগাদ ১ থেকে দেড় কোটি কেজি চা রপ্তানি করতে পারব।’

দেশের ২ লাখ ৭৯ হাজার ৫০৬ একর জমিতে ১৬৭টি টি এস্টেট ও চা-বাগান রয়েছে। মৌলভীবাজারে ৭৬টি চা এস্টেট ও ১৫টি বাগান, হবিগঞ্জ ২২টি এস্টেট ও ৩টি বাগান, সিলেট জেলায় ১২টি এস্টেট ও ৭টি বাগান রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় ১৮টি টি এস্টেট ও ৩টি বাগান রয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলায় ১টি টি এস্টেট ও ১টি বাগান, পঞ্চগড় জেলায় ৮টি বাগান রয়েছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় ১টি চা-বাগান রয়েছে। এসব এস্টেট ও বাগান থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৮০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়।