বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভারতের জলপাইগুড়িতে চোরাশিকারীদের ফাঁদে পড়ল আস্ত এক চিতাবাঘ । বিপদে পড়ে যন্ত্রনায় ছটফট করতে শুরু করে সে। পরে বনকর্মীরা ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাকে কাবু করে। শনিবার এমনই এক রোমহর্ষক ঘটনার সাক্ষী থাকল ডুয়ার্সের জঙ্গল।
জানা গেছে, শনিবার সকালে ডুয়ার্সের হলদিবাড়ি চা বাগানে কাজ করতে যাচ্ছিলেন শ্রমিকেরা। মরাঘাট রেঞ্জের অন্তর্গত সাউথ-মরাঘাট ১২ নম্বর কম্পার্টমেন্ট সংলগ্ন এলাকা পার হওয়ার সময় দূর থেকে গোঙানির আওয়াজ পান স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর কাছাকাছি যেতেই তাঁরা দেখেন, একটি চিতাবাঘ ফাঁদে আটকে পড়ে রয়েছে। প্রবল গর্জনে তখন সেখানে কান পাতা দায়! এই খবর চাউর হতেই হইচই শুরু হয়ে যায় এলাকায়।
সঙ্গে সঙ্গে খবর যায় মরাঘাট রেঞ্জ এবং বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডে। এরপর বনকর্মীরা তড়িঘড়ি অকুস্থলে পৌঁছন। তাঁরা দেখতে পান, জঙ্গলে ঝরা পাতার আড়ালে ছোট্ট একটি ফাঁদ পেতে রাখা। মরাঘাট রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার রাজকুমার পাল জানান, “এই ধরনের ফাঁদ সাধারণত বনবস্তি এবং চা বাগান এলাকার কিছু মানুষ বেআইনি ভাবে জংলি ইঁদুর এবং খরগোশ ধরার জন্য ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু সেই ফাঁদেই পা দিয়ে ফেলে চিতাবাঘটি।”
চিতাবাঘটির একটি পায়ের নখ জড়িয়ে গিয়েছিল সেই ফাঁদে। এমনভাবেই তা জড়িয়ে যায় যে, টানাটানি করে খুলতে পারেনি সে। বরং আরও পেঁচিয়ে একেবারে বিচ্ছিরি অবস্থা হয়। যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকে চিতাবাঘটি। শেষে চিতাবাঘটিকে ফাঁদমুক্ত করতে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন বনকর্মীরা। পরে ফাঁদমুক্ত করে চিতাবাঘটিকে জলদা পাড়ার খয়েরবাড়ি রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা চলছে চিতাবাঘটির।
অনারারি ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন রাজেশ লাকড়া বলেন, “বারবার সচেতনতা প্রচার করার পরেও কিছু মানুষের হুঁশ ফিরছে না। এরা জঙ্গলে গিয়ে চোরা শিকার করে। আসলে বনকর্মীরা নজরদারি চালায়। কিন্তু হাতির হানায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর পর আমাদের কর্মীরা হাতির ডিউটি বেশি করছে। সেই সুযোগে এই কাজ করেছে কিছু অসাধু চক্র।” ঘটনায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়েছে বন দফতর।