জাহিদ মাহমুদ
মেহেরপুর: রাজপথে ছাত্রলীগ আর ছাত্রদলের মধ্যে কেমন সম্পর্ক তা সকলেরই জানা। সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক নানা বিষয়ে বৈরিতা। রাজপথে তিক্ত সম্পর্ক। মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে সেই সম্পর্ক ভুলে ছাত্রদলের নেতার পাশে অক্সিজেন সেবা নিয়ে, এগিয়ে এলেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। যার মধ্য দিয়ে মানবতার আরেকটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মেহেরপুর জেলা ছাত্রলীগের কোভিড-১৯ স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের কর্মীরা।
মেহেরপুর জেলা ছাত্রদলের সহ সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস করোনা আক্রান্ত হয়ে গাংনী উপজেলার নওদা মটমুড়া গ্রামের বাড়িতে চিকিৎসাধীন।
শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে তার শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে দিশেহারা তার পরিবারের লোকজন। অক্সিজেন সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়ে তারা ছাত্রলীগের কোভিড-১৯ স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের হটলাইন নম্বরে কল দিয়ে সহায়তা কামনা করেন। তাতে মানবিক সাড়া দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বিনামূল্যে অক্সিজেন সহায়তা আর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের পাশে পেয়ে আবেগাপ্লুত ছাত্রদল নেতা ও তার পরিবারের লোকজন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ও কোভিড ১৯ স্বেচ্ছাসেবক ইউনিট আহবায়ক মুনতাছির জামান মৃদুল বলেন, আমরা ইমরুল কায়েসের পরিবারের কল পেয়ে সাড়া দেই।
কোভিড-১৯ সেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্য সচিব ও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল জাহান শিশির, সেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্য জেলা মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সভাপতি ইউসুব আলী, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তপু রায়হান রবিন মোটর সাইকেলযোগে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে তার কাছে ছুটে যায়।
স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্য ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জুবায়ের হোসেন উজ্জল জানান, ইসরুল কায়েসের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ছিল। অক্সিজেন সেবা পেয়ে তিনি এখন বেশ সুস্থ। তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও অন্যান্য চিকিৎসা সেবা আমাদের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হবে।
রাজনৈতিক বিরোধ ভুলে ছাত্রদলের নেতাকে সেবা দিতে পেরে অনেক ভালো লাগছে বলে জানালেন ছাত্রলীগের স্বেচ্ছাসেবক ইউনিটের সদস্যবৃন্দ।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এ ধরনের উদ্যোগ মানবতার আরও একটি অনন্য দৃষ্টান্ত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় জেলা ছাত্রলীগের কোভিড-১৯ স্বেচ্ছাবেক ইউনিটের মানবিক কার্যক্রম জেলা ছাপিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগেও প্রশংসা কুড়িয়েছে। ঈদের আগের রাতে করোনা আক্রান্ত দুই ব্যক্তির মরদেহ দাফন-কাফনে ঈদ ও কোরবানি উপভোগ করেনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।