Home Second Lead টমেটো কেজি কাঁচা ৩, পাকা ৫

টমেটো কেজি কাঁচা ৩, পাকা ৫

ছবি: সংগৃহীত

দরপতনে দিশেহারা কৃষক

সারোয়ার আহমেদ

রাজবাড়ী: গোয়ালন্দে টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। কাঁচা টমেটো ৩ টাকা, পাকা ৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। দাম না পাওয়ায় এ সবজি গরুর খাবারে পরিণত হয়েছে।

এই উপজেলায় প্রতি মৌসুমে বিপুল পরিমাণ টমেটো উৎপাদন হয়। এবারও শুরুর দিক  লাভের মুখ দেখলেও মৌসুমের এই সময়ে এসে উৎপাদন খরচ তুলতে কৃষকদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।

টমেটোর দরপতন ও বিক্রির জন্য পাইকার ব্যবসায়ী না পাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। তাদের দাবি খেত থেকে টমেটো তুলে বিক্রি করার পর যে মূল্য পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। নিজের পকেট থেকে মজুরি দিতে হচ্ছে।

ব্যবসায়ীদের দাবি, এবার একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে টমেটো উঠেছে, তাই কারোরই লাভ হচ্ছে না। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারিভাবে হিমাগার নির্মাণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,  চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে।

উপজেলার তেনাপচা গ্রামের টমেটো চাষি আহম্মদ শেখ বলেন, এবার ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবারে টমেটোর ফলন ভালো। কিন্তু দাম একেবারেই নেই। গত বছরেও তাদের লোকসানে পড়তে হয়েছিল রোগবালাইয়ের জন্য। আর এবারে দাম না পেয়ে লোকসানে পড়তে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকেরা টমেটোর আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।

একই গ্রামের টমেটো চাষি হানিফ মোল্লা বলেন, ২২ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত টমেটো বিক্রি করেছি মাত্র ৭ হাজার টাকার। ২২ শতাংশ জমিতে টমেটো চাষ করতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৩৫ হাজার টাকা। খরচের টাকা উঠছে না। এখন খেত থেকে টমেটো তুলে যে টাকা পাচ্ছি তা দিয়ে শ্রমিকদের মজুরি হচ্ছে না। তাই খেত থেকে টমেটো তোলা বন্ধ করে দিয়েছি।

দাম কমের ব্যাপারে টমেটোর পাইকারি ক্রেতারা বলছেন, এখানকার মতো ঢাকাসহ অন্যান্য শহরেও টমেটোর দাম কম। যার কারণে তারা ভালো ব্যবসা করতে পারছেন না। তা ছাড়া বাজারে টমেটোর আমদানি অনেক বেশি থাকায় দাম কম।

টমেটো ব্যবসায়ী আজাদ জানান, যদি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চাহিদা থাকতো, তাহলে বাজার ভালো হতো। চাহিদা না থাকায় দাম কম। তবে দিনে দিনে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, গোয়ালন্দ উপজেলায় আগাম টমেটো চাষ হয়। প্রথম দিকে ভালো দাম পাওয়া যায়। এই সময় টমেটোর দাম কম থাকে। এখন সারা বাংলাদেশে টমেটো উঠতে শুরু করেছে তাই দাম কম।