সার্বিয়ার স্টারা প্লানিয়া পবর্তের গুহায় তাঁর বাস। সেই ২০ বছর ধরে আছেন তিনি। নির্দিষ্ট ওই গুহাই তাঁর ঘরবাড়ি। কিন্তু সমাজ-সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেও এক দারুণ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি এই করোনা আবহে। স্বেচ্ছায় বেরিয়ে এসে টিকা নিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এবং সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে বেশ চর্চা শুরু হয়েছে।
গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে করোনা প্যানডেমিকের সঙ্গে লড়াই করছে গোটা বিশ্ব। স্পর্শে ছড়াচ্ছে অসুখ, তাই সামাজিক দূরত্ব এর অন্যতম দাওয়াই।
কিন্তু সার্বিয়ার দক্ষিণে পাহাড়ের গুহায় টানা ২০ বছর ধরে থাকা পান্টা প্যাট্রিকের এ নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না। কারণ ৭০ বছর বয়সি মানুষটি একাই থাকেন গুহায়।
এরই মধ্যে একদিন জরুরি জিনিসপত্র কিনতে কাছাকাছির এলাকায় সুপারমার্কেটে যান তিনি। সেখানেই করোনা সম্পর্কে জানতে পারেন। সব শুনে তিনি করোনার টিকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।তিনি বলেন, “যা শুনছি, তাতে একে বিশ্বাস নেই। এই করোনা আমার সঙ্গে আমার গুহা পর্যন্তও যেতে পারে। তাই টিকা নিয়ে নিলাম। সবার নেওয়া উচিত।”প্যাট্রিক যে গুহায় বাস করেন, সেখানে যাওয়ার সহজ কোনও সুগম রাস্তাই নেই। খাড়া পাহাড় পাড়ি দিয়ে তবেই পৌঁছনো যায় প্যাট্রিকের গুহায়। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সেখান থেকে তিনি বেরোন না।
কিছু পশু-পাখি চরান তিনি, তা থেকেই ডিম, দুধ, মাংস পান খাওয়ার জন্য। এছাড়া আছে বন্য ফলমূল, মাশরুম, পাহাড়ি নদীর মাছ। এইবার তাঁকে ভাগ্যিস দোকানে যেতে হল, তাই তো জানতে পারলেন করোনা সম্পর্কে! টিকার রক্ষাকবচও নিতে পারলেন!
প্যাট্রিক বছর ২০ আগে গুহায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করার আগে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন শহরে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বৈরাগ্য আসতে থাকে শহুরে জীবনের প্রতি। তিনি বিরক্ত বোধ করতে থাকেন মানুষের ভিড়ে, শব্দে। সেইসঙ্গে তাঁর মনে হয়, অর্থই হল জীবনের বড় অভিশাপ। তাঁর মতে, অর্থ মানুষকে নষ্ট করে দেয়।তাই একসময় সব ছেড়েছুড়ে পাহাড়ে চলে আসেন প্যাট্রিক। শুরু করেন গুহামানবের জীবন। আজ সেই জীবনের অধিকারী হয়েও তিনি পরিচয় দিলেন সচেতনতার।
-বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক। এই প্রতিবেদনের সব ছবি সংগৃহীত।