তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাকে এখন কেউ আর সাড়া দেয় না, এমনকি তাদের নেতা-কর্মীরাও সাড়া দেয়নি। তাদের সেই বর্জনের হাঁকডাকও নির্বাচনী প্রচারণার মধ্যে ঢাকা পড়ে গেছে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী আংশিক) আসনের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর বর্তমান ও সাবেক চেয়ারম্যান, মেম্বার, পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি’র অনেক নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারা দল থেকে বের হয়ে তৃণমূল বিএনপি গঠন করেছে। আমাদের এখানেও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আছে। আজকে দেশে একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হযেছে। গ্রামে-গঞ্জে হাটে মাঠে-ঘাটে সব জায়গায় আজ নির্বাচনের আলোচনার ঝড়। সমগ্র বাংলাদেশে বিএনপি’র শত শত নেতা আজকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, নির্বাচনের সাথে যুক্ত হয়েছে।
‘বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাক ভণ্ডুল হয়ে গেছে, এখন তারা দেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা করছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঢাকায় একটি ট্রেনে আগুন জ্বালিয়ে তারা ঘুমন্ত চারজন মানুষকে হত্যা করেছে। একজন মা মৃত্যুর মধ্যেও সন্তানকে বুকে আগলে রেখেছে, বুক থেকে অঙ্গার হয়ে যাওয়া সন্তানকে সরানো যাচ্ছে না। এই ধরণের বীভৎসতা কোন রাজনৈতিক দল করতে পারে না, যেটি বিএনপি করছে। সুতরাং, এই বিএনপির আর জনগণের কাছে আসার কোন সুযোগ নেই। আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে জনগণের শত্রুতে রূপান্তরিত হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আজকে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ, তাদের ধিক্কার জানাচ্ছে। আমরা আগুন সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিএনপি যাদের ওপর ভরসা করেছিল তারাও বলছে, তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। ক’দিন আগে জাতিসংঘ বিবৃতি দিয়েছে, নির্বাচনে যাতে সবাই ভোট দিতে পারে। তার মানে বিএনপি যে নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধেই তারা সেটি বলেছে।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হওয়া দরকার, আমরা সেটাই করতে চাই, সেটিতে বাধা দিচ্ছে বিএনপি। আমরা আশা করবো ভিসা নীতি যেটি ঘোষণা করা হয়েছে, বিএনপিসহ যারা এই নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে, তাদের ওপরই এই ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হবে ইনশাল্লাহ।’
স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে হাছান মাহমুদ বলেন, জনপ্রতিনিধিরাই সমাজের স্বাভাবিক নেতা। নির্বাচন উপলক্ষে তাই আমি প্রথম বৈঠকটি আপনাদের দিয়েই শুরু করেছি। জনপ্রতিনিধিরাই কারো বাড়ির উঠানে, চায়ের দোকানে মাঠে-ঘাটে ও মসজিদের আঙ্গিনায় থাকেন। আপনারা যে কথাটি মানুষকে বলবেন, সেটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। আপনারাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে বার্তা পৌঁছানোর কাজটি করেন।
রাঙ্গুনিয়ার সন্তান ড. হাছান বলেন, গত ১৫ বছর আমি সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা এবং নিষ্ঠা দিয়ে চেষ্টা করেছি এলাকার মানুষের পাশে থাকা, এলাকার উন্নয়ন করার জন্য, সব মানুষের এমপি হওয়ার জন্য। গত ১৫ বছর সবার জন্য আমার দুয়ার খোলা ছিল। কে আমাকে ভোট দিয়েছিল, কে দেয় নাই, ভবিষ্যতে কে দেবে কিংবা দেবে না, সেটি আমি মাথায় রাখি না। যেই আমার কাছে আসে উপকার করার চেষ্টা করেছি।
চট্টগ্রাম ৭ আসনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বজন কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জি. শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম চিশতি, মো. শাহজাহান সিকদার, মুহাম্মদ আলী শাহ, সাবেক চেয়ারম্যান নুর কুতুবুল আলম, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ সৈয়দ তালুকদার, দানু মিয়া, আবু জাফরসহ ইউপি সদস্যরা।