Home First Lead নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ট্রাস্টিকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ট্রাস্টিকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ট্রাস্টিকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন হাইকোর্ট। তারা হলেন রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ। একই সঙ্গে হেফাজতে নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির করতে শাহবাগ থানা–পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অর্থ আত্মসাতের মামলায় আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।

ওই মামলায় জামিন চেয়ে চারজনের করা পৃথক আবেদনের শুনানি শেষে আজ রবিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে শুনানিকালে আদালত বলেন, মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি হত্যার চেয়ে বিপজ্জনক অপরাধ। একটি হত্যা একজন ব্যক্তি বা পরিবার বা সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ৫ মে মামলা করে দুদক।

ছয়জনের মধ্যে ওই চারজন আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর ওপর গত বুধবার শুনানি হয়। ওই দিন আদালত পক্ষগুলোকে শুনানির সারসংক্ষেপ লিখিত আকারে জমা দিতে বলে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। ধার্য তারিখে আবেদনকারীপক্ষ সারসংক্ষেপ লিখিত আকারে জমা দিতে সময়ের আরজি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রবিবার বেলা দুইটা পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। একই সঙ্গে আবেদনকারীদের নির্ধারিত সময়ে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।

এর ধারাবাহিকতায় বেলা সোয়া ২টার দিকে জামিন আবেদনের শুনানি হয়। এ সময় চার আবেদনকারী আদালতে হাজির ছিলেন।

আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও মিজান সাঈদ।  দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বিক্রেতার নিকট থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরবর্তীতে নিজেরা উক্ত এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য উক্ত অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তর মাধ্যমে আসামিরা মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।