মোঃ ইমরান ইসলাম, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) থেকে: নওগাঁর নিয়ামতপুরে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও ভাল।
দেশে এবার ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার কারণে অধিক জমিতে সরিষা চাষে আগ্রহ ছিল কৃষকদের। এছাড়া পরিবারের সারা বছরের ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতেও সরিষা চাষ করছেন অনেক কৃষক। ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৪ হাজার ৪ শত ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বারী- ৯, বারী-১৪, বারী-১৭, বারী-১৮ ও দেশী জাতের সরিষা চাষ করেছেন চাষীরা। উপজেলার নিয়ামতপুর, গাবতলী, ছাতড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ সরিষা প্রকার ভেদে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সরিষা চাষ লাভজনক । অতি অল্প সময়ে, অল্প পুঁজিতে কৃষকরা লাভবান হন। তাই অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা চাষের দিকে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষা চাষের ফলনকে বোনাস হিসেবে দেখছেন। আমন ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগাতে হয়। যা মাত্র ৫৫ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে সরিষা আবাদ করতে খরচ হয় ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। যদি সঠিক ভাবে পরিচর্যা করা যায় তাহলে প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫ থেকে ৬ মণ।
উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর আলী জানান, আমন ধান কাটার পর তিনি দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি মণ সরিষা ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এতে বোরো আবাদের তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হবে বলে জানান তিনি।
সরিষা চাষী মোজাফফর হোসেন জানান, পরিবারের খাবার তেলের চাহিদা মেটাতে তিনি আড়াই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ফলন খুব ভালো হয়েছে। নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সরিষা বিক্রি করেছেন। বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে অধিক ফলন পেতে নানা ভাবে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষি প্রনোদনায় সার ও বীজ সঠিক সময়ে কৃষকদের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। ফলে কৃষকের কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। উৎপাদন ও দামে কৃষকরা সন্তুষ্টি।