Home First Lead ২০ জানুয়ারির মধ্যে ৪০ কোটি পাঠ্যবই বিতরণে তৎপরতা

২০ জানুয়ারির মধ্যে ৪০ কোটি পাঠ্যবই বিতরণে তৎপরতা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: নতুন শিক্ষাবর্ষে ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব শ্রেণির পাঠ্যবই ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে পুরোদমে কাজ চলছে। তবে, কিছু কিছু প্রকাশক সময় বাড়ানোর জন্য তৎপর বলে জানা গেছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রায় ৪০ কোটি বই ছাপানো হবে। এগুলোর মধ্যে প্রাথমিকের বই প্রায় ১২ কোটি। তুলনামূলক কম পরিবর্তন থাকায় ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের সব ছাপানো হবে। একই সঙ্গে বিতরণের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের বইয়ে পরিবর্তন বেশি থাকায় সময় লাগছে বেশি। তাই ১ জানুয়ারির মধ্যে মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের বই বিতরণ করার পরিকল্পনা করা হয়। আর ১০ জানুয়ারির মধ্যে পাঁচটি এবং ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই বিতরণ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়।

বই বিতরণের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সচিব শাহ্ মুহাম্মদ ফিরোজ আল ফেরদৌস স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘২০২৫ শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য মনিটরিং কার্যক্রম চলছে এবং এটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ বিধায় বোর্ডে কর্মরত সব কর্মকর্তা/কর্মচারীর (সেসিপ প্রকল্পসহ) নৈমিত্তিক/সাপ্তাহিক ছুটি নির্দেশক্রমে বাতিল করা হলো।

এনসিটিবি আগামী বছরের ২০ জানুয়ারির মধ্যে সব ধরনের পাঠ্যপুস্তক বিতরণ সম্পন্ন করতে চাইলেও কাগজ সরবরাহ নিয়ে জটিলতা এবং ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া সময়সাপেক্ষ হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে বই পৌঁছানো নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন প্রকাশকরা। মুদ্রণ শিল্প সমিতির এক শীর্ষ নেতা বলেন, এবার কাগজের সংকট রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না। আর কার্যাদেশ বা ওয়ার্ক অর্ডার চূড়ান্ত করতেও সময় লেগেছে। ফলে ব্যাংক থেকে ঋণ পেতেও আমাদের সময় লাগছে। তবে সরকার থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তারপরও ঋণ অনুমোদন হতে বোর্ড মিটিং লাগে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা দ্বিধায় আছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বই দিতে পারলে আমাদেরও ভালো লাগত।

গত ৫ আগস্ট রজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে এবার ১২ বছর আগের শিক্ষাক্রমে ফিরছে প্রাথমিক-মাধ্যমিকের শিক্ষাব্যবস্থা। ফলে নতুন বছরে ছাপা মোট বইয়ের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ১৬ লাখ। বেড়েছে বাজেটও।

গত কয়েক বছরে পাঠ্যবই ভারতে ছাপা হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরের বাস্তবতায় এবার দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই ছাপার কাজ করছে। সব কিছু গুছিয়ে আওয়ামী আমলের দরপত্র বাতিল করে নতুন করে দরপত্র দেয় সরকার পক্ষ।

গত ১০ ডিসেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ফরাজী প্রেস অ্যান্ড পাবলিকসন্সে নিম্নমানের কাগজে ছাপানো প্রায় ৩০ হাজার কপি প্রাথমিকের পাঠ্যবই হাতেনাতে ধরে বাতিল করে এনসিটিবির মনিটরিং টিম। কাগজের বার্স্টিং ফ্যাক্টর না মানায় ও উজ্জ্বলতা কম হওয়ায় শোকজও করা হয় ফরাজী প্রেসকে।

তার আাগে ৫ ডিসেম্বর নিম্নমানের কাগজে পাঠ্যবই ছেপে হাতেনাতে ধরা পড়ে অগ্রণী প্রিন্টিং প্রেস ও কর্ণফুলী আর্ট প্রেস। নোয়াখালীর চৌমুহনীতে গিয়ে এই দুটি প্রেসে নিম্নমানের কাগজে ছাপানো প্রাথমিকের পাঠ্যবইও হাতেনাতে ধরেন এনসিটিবি কর্মকর্তারা। দুটি প্রেসের প্রায় ৫০ হাজার পাঠ্যবই বাতিল করা হয়।