স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং অন ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিস শীর্ষক কর্মশালা
চট্টগ্রাম
গণতন্ত্রের মূল মর্মবাণী পারস্পরিক সহমর্মিতা, পরমতসহিঞ্চুতা, সহনশীলতা, ধৈয্য ও অসহিংষতা হলেও বিরোধী ও মতের প্রতি ক্ষমতাসীন দলের অবস্থা পুরোপুরি বিপরীত। রাজনৈতিক দলগুলো নেতা/কর্মীদের মাঝে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক চর্চা ও অনুশীলনের মাধ্যমে শান্তিপুর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর কাজ হলেও বিত্তবৈভব, প্রাচুর্য ও নিজেদের স্বার্থসংরক্ষন এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। এ কারণে সাধারন মানুষের স্বার্থ ও তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা এখন আর রাজনৈতিক দলের আলোচনায় আসে না। আর এর পেছনে নিয়ামক ভূমিকা রেখেছেন সমাজের একেবারে নিম্নস্তরের স্কুল কমিটি, মসজিদ কমিটি, বাজার বা ব্যবসায়ী সমিতি, পাড়া মহল্লার ক্লাব, সামাজিক সংগঠনের নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সংস্কৃতির বিলুপ্তি। কমিটি গঠিত হয় ওপর মহলের নির্দেশনায়। ফলশ্রতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহন এখন আর মূখ্য নয়। রাজনীতিতে জনঅংশগ্রহন ও জনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক চর্চা ও গনতান্ত্রিক আচরন পরিবর্তিত হয়ে গেছে। একারণে একশ্রেণীর মানুষ রাজনীতি বিবর্জিত হয়ে গেছে।
২৪ জুলাই ২০২৩ইং চট্টগ্রামে নগরীর কারিতাস প্রশিক্ষন কেন্দ্র মিলনায়তনে পালস বাংলাদেশ সোসাইটি নামক একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের “নাগরিক” প্রকল্পের আওতায় স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং অন ডেমোক্রেটিক প্র্যাকটিস শীর্ষক কর্মশালায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সহায়ক ছিলেন পালস বাংলাদেশের পরিচালক আবুল বাশার। আলোচনায় অংশনেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বাংলাদেশ আওমীলীগ উত্তর জেলার উপদেষ্টা এম নাসিরুল হক, ক্যাব বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, এডাব চট্টগ্রামের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, ন্যাপ কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিটুল দাস গুপ্ত, বোধন আবৃত্তি সংসদের সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা বেগম, ফেরদৌসী তাহের, আলহাজ আবদুল মান্নান, মুক্তিযোদ্ধা আ ব ম হুমায়ুন কবির, রাজনৈতিক কর্মী নবুয়াত আরা সিদ্দিকী, মোহাম্মদ জানে আলম, সালাহউদ্দীন আহমদ, হেলাল চৌধুরী, ইসমাইল ফারুকী, মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, আবুল কাশেম, হারুন গফুর ভুইয়া, দিদার প্রধান, প্রকৌশলী ইব্রাহিম, চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, জাহাঙ্গীর মোস্তফা, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ মনিরুজ্জান, মাহবুবুর রহমান দুর্জয়, আইন কলেজের সাবেক ভিপি রেবা বড়ুয়া, লায়লা ইয়াছমিন প্রমুখ।
সভায় বলা হয় আদর্শ নাগরিক গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা সকল নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব হলেও রাজনৈতিক দলের ওপর সে দায়িত্ব দিয়ে অনেকেই নিরব দর্শক। জনমূখি নেতৃত্বের মৌলিক ধারনা, গণতান্ত্রিক অনুশীলনের অভাব, পারম্পরিক দ্বন্দ্ব নিরসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ সুদুর পরাহত। এতে রাজনৈতিক সহাবস্থান ও সামাজিক শান্তি নষ্ট হচ্ছে। ফেসবুকে পোস্ট দেয়া নিয়ে মানুষ সংঘাতে জড়াচ্ছে, অনেকের সাম্প্রয়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে।
উল্লেখ্য নাগরিক প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম, ককসবাজার ও বান্দারবান জেলায় জনমুখি নেতৃত্ব সম্পর্কে মৌলিক ধারণা প্রদান, গনতান্ত্রিক অনুশীলন, দ্বন্দ্ব নিরসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নাগরিকদের অধিকার ও দায়িত্ব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে ইতিবাচক প্রচারাভিযান বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ও রাজনীতি সচেতন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিমুলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রকল্পটি অর্থায়ন করছে ইউএসআইডি ও আইআরআই।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি