বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার ভোরে চালানো ওই হামলায় এক আইএস সদস্য নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন সেনা কর্মকর্তারা। খবর বিবিসির।
নানগাহার প্রদেশে অবস্থানরত কাবুল হামলার ‘পরিকল্পনাকারী’ আইএস সদস্যকে লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী ওই অভিযান চালায়। আইএস বলছে, তারা কাবুল বিমানবন্দরে বৃহস্পতিবার আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। এতে ১৩ মার্কিন সেনাসহ ১৭০ জন মানুষ নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, নানগাহারে যে ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলাটি চালানো হয়েছে, তার মৃত্যু হয়েছে।
এ হামলায় কোনো বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়নি বলেও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবারের জোড়া বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনা সহ কমপক্ষে ১৭০ জনের মৃত্যুর পর আমেরিকা পাল্টা আঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। নাশকতায় দোষীদের এর মূল্য চোকাতে হবে বলে জানিয়েছিলেন কান্নায় ভেঙে পড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বলেছিলেন, যারা হামলা চালিয়েছে বা যে কেউ, যে আমেরিকার ক্ষতি চায়, তাদের উদ্দেশে বলছি, আমরা ক্ষমা করব না, ভুলে যাব না। তোমাদের খুঁজে বের করে মূল্য চোকাতে বাধ্য করব।
পাশাপাশি কাবুল থেকে মার্কিন নাগরিকদের বিমানে উদ্ধার করে নিয়ে আসার অভিযানও পুরোদমে চলবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
ভয়াবহ নাশকতার ৪৮ ঘন্টা না যেতেই তার দায় স্বীকার করা আইসিস (খোরাসান) সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর এক প্ল্যানারের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাল মার্কিন সামরিক বাহিনী।
সংবাদ সংস্থা এপি-র খবর, মার্কিন সেন্ট্রাল কম্যান্ডের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেছেন, এক আইসিস-কে চক্রীর বিরুদ্ধে আকাশ সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসদমন অভিযান চালিয়েছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। আফগানিস্তানের ননগরহর প্রদেশে চলেছে মানবহীন বিমান হামলা। প্রাথমিক ইঙ্গিত, আমরা টার্গেট করা লোকটিকে খতম করেছি। কোনও অসামরিক নাগরিকের প্রাণ হারানোর খবর নেই।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের খবর, আইসিস-কের ওই প্ল্যানারের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালানোয় চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
এর মধ্যেই কাবুলের মার্কিন দূতাবাস ফের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দরজায় দরজায় জড়ো হওয়া মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তার বিপদের আশঙ্কার উল্লেখ করে অবিলম্বে সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তাঁদের বিমানবন্দর যাত্রা ও সেখানকার দরজা এড়িয়ে যেতে বলা হয়।
গত পরশুর প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের পরও বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা টিম তাঁকে জানায়, কাবুলে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলার শঙ্কা রয়েছে। তবে তাঁরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুরক্ষার আয়োজনই করছেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, আমরা এখনও বিশ্বাস করি, নির্দিষ্ট বিপদ, আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণগুলির একটির সাক্ষী হওয়ার পরও কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানদের থিকথিকে ভিড়ের বিরাম নেই। কাতারে কাতারে মানুষ সেখানে অপেক্ষা করছেন। শহরের হাসপাতালগুলিতে বিস্ফোরণে আহতদের চিকিত্সায় শুক্রবার সারাদিন ব্যস্ততা চোখে পড়েছে। কাবুলের আকাশে বাতাসে আশঙ্কা, এই না ফের কখন আচমকা বিস্ফোরণ ঘটে যায়!