বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: না, কিছুতেই ছন্দে ফিরতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। এক দিন দর বাড়ে তো তিন দিন দরপতন হয়। ফ্লোর প্রাইস ও দফায় দফায় দরপতনে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা এখন দর্শকের ভূমিকায়।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অব্যাহত দরপতনের কারণে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লোকসানি অবস্থায় শেয়ার ধরে রেখেছেন। মাঝখানে দুয়েকদিন দর বাড়লেও বিক্রি করে মুনাফা তো নয়ই উল্টো লোকসান গুনতে হবে। ফলে তাদের বসে থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, অনেক বিনিয়োগকারী প্রতিদিনই হাউসে যাচ্ছেন। কিন্তু শেয়ার কেনাবেচা করতে পারছেন না। তারা প্রতিদিনই বাজারে আসেন যদি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস থেকে উঠে তাহলে হয়তো লেনদেনে ফিরতে পারবেন এমন আশায়।
আবার অনেকে গত তিন মাসের বাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি দেখে নতুন করে মার্জিন ঋণ বা অর্থ লগ্নি করেছেন। তারাও গত এক মাসের টানা দরপতনের কারণে পুঁজি হারিয়েছেন। ফলে হতাশা নিয়েই তারা প্রতিদিন ঘরে ফিরছেন।
প্রতিদিন গড় লেনদেন হাজার কোটি টাকা থেকে পৌনে ৪শ’ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। বাজারে ৫০ শতাংশ শেয়ারই ফ্লোর প্রাইসে, তাই বাকি ৫০ শতাংশের দরপতনে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে সূচকে।
আইসিবি সিকিউরিটিজ ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের একজন বিনিয়োগকারী বলেন, ‘গত এক বছর যাবৎ শেয়ার বিক্রি করতে পারছি না। সব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে। এর মধ্যে কিছু শেয়ার লেনদেনে গতি পাওয়ায় নতুন অর্থ বিনিয়োগ করেছিলাম। বর্তমানে সেখানেও লোকসান। হয়তো শেয়ার বিক্রি করতে পারব তবে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ লোকসান দিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফুওয়াং ফুড, এমারেল্ড অয়েলসহ বেশ কিছু কোম্পানির কথা উল্লেখ করেন তিনি।
কিছু বিনিয়োগকারী লোকসান দিয়েও শেয়ার বিক্রি করতে চায়। কিন্তু ফ্লোর প্রাইসে ক্রেতা না থাকায় কেউই বিক্রি করতে পারছেন না। এরই মধ্যে কয়েকটি কারসাজি চক্র অস্বাভাবিকভাবে শেয়ারের দর বাড়িয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। আবারও ফ্লোর প্রাইসে ফেরত চলে আসছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেকেই এখন লেনদেন করতে পারছেন না। তবুও তারা প্রতিদিন হাউসে আসেন। যদি কোনো শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ভাঙে সেই আশায় থাকেন। আর এই হাউসে অনেকেই মার্জিন ঋণ নিয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাই এখন মার্জিন ঋণই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘বাজারে বিনিয়োগকারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। কৃত্রিমভাবে কিছু শেয়ারকে বাড়ানো হচ্ছে। যারা এতে পা দিচ্ছেন তারা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। হাতেগোনা কিছু কোম্পানির লেনদেন হচ্ছে। এটা ভালো পুঁজিবাজারের লক্ষণ নয়।’