Home First Lead পূজামণ্ডপে ইসলামী গান নিয়ে তুলকালাম, গ্রেপ্তার ১

পূজামণ্ডপে ইসলামী গান নিয়ে তুলকালাম, গ্রেপ্তার ১

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপে ‘ইসলামিক গান’ পরিবেশনের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়  চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি গানের দল ওই গান পরিবেশন করে। এর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই গানের দলের ছয় সদস্য গান পরিবেশন করতে মঞ্চে ওঠে। সংগঠনটি শাহ্ আবদুল করিমের লেখা বিখ্যাত গান ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ এবং চৌধুরী আবদুল হালিমের লেখা ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’-শীর্ষক গান দুটি পরিবেশন করে। এর মধ্যে শুধু ‘মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম, বিশ্ব মানুষের কল্যাণে স্রষ্টার এই বিধান’-গানটির ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। আর সেই গান গাওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা শুরু হয়। জানা যায়, পূজা উদযাপন কমিটির এক নেতার আমন্ত্রণে সংগঠনটি ওই পূজা মণ্ডপে গান করতে যায়। তবে গান গাওয়ার পরে সনাতন ধর্মের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তারা ওই সংগঠনটিকে জামায়াতে ইসলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করেন। যদিও জামায়াত জানিয়েছে, তারা এই গান করার বিষয়ে কিছুই জানে না, গানের দলটিও তাদের কোনো অঙ্গ সংগঠন নয়।

আলোচ্য একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পূজা উদযাপন পরিষদের সজল বাবু আমাদের দাওয়াত দিয়েছিলেন। তিনি ফোন করে বলেন, আপনারা একটু আসেন। আপনাদের একটু ফ্লোর (সুযোগ) দেব। কিছু দেশাত্মবোধাক গান গাইবেন। সে আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের দলটি দু’টি সম্প্রীতির গান করে। কিন্তু এটি নিয়ে একটা পক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছে ষড়যন্ত্র করতেই আমরা গান করতে গিয়েছি। আমরা তো জোরপূর্বক কিছুই করিনি। দাওয়াত পেয়েই গিয়েছিলাম।’

সেলিম জামান বলেন, ‘এটি জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো সংগঠন নয়। শুদ্ধ সাংস্কৃতিক চর্চার উদ্দেশে ২০১৫ সালে আমাদের গানের দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।’

চট্টগ্রাম  পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের অনুমতি নিয়ে ওই গানের দলটি পূজা মণ্ডপে এসে গান পরিবেশ করেছে বলে জেনেছি। তবে ওই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’ সংগঠনটি জামায়াত সংশ্লিষ্ট কী না প্রশ্নে হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার জানা নেই।’

চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ও প্রচার বিভাগের পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কয়েকটি ছেলে মণ্ডপে গিয়ে সম্প্রীতির গান গেয়েছে শুনলাম। তবে এদের সঙ্গে জামায়াত বা শিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

পূজামণ্ডপে গান গাওয়া নিয়ে ছাত্রশিবিরের অবস্থান তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

তিনি লিখেছেন

 

‘১. এই ঘটনার (পূজামণ্ডপে গান গাওয়া) সাথে অনেকেই ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। আমি দায় নিয়ে বলছি, এর সাথে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

২. শিবির কারো ধর্মীয় অনূভুতিতে আঘাত করে এমন কাজকে কখনোই সমর্থন করে না। তাই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

৩. ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট দাবি জানাচ্ছি, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সত্য সবার সামনে উঠে আসুক। কেউ দোষী হলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি দেয়া হোক।

 

৪. সত্যতা যাচাই না করেই যারা বিভিন্ন সময়ে শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালায়, তারা একটা সময় গিয়ে নিজেদের বিবেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। এ ধরণের কাজ থেকে ভবিষ্যতে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।’