Home খেলাধুলা প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শেষ চারে পেরু

প্যারাগুয়েকে হারিয়ে শেষ চারে পেরু

কোপা আমেরিকার প্রথম কো্য়ার্টার ফাইনালে পেরুর বিপক্ষে ম্যাচের বেশিরভাগ সময় একজন কম নিয়ে খেলে দারুণ লড়াই করেছে প্যারাগুয়ে। দুবার পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচকে টাইব্রেকারে নিলেও জয়ের দেখা পায়নি তারা। পেনাল্টি শুট-আউটে জমজমাট লড়াইয়ে সাফল্য পেয়ে টুর্নামেন্টের শেষ চারে জায়গা করে নিলো পেরু।

শনিবার গোয়ানিয়ার অলিম্পিকোয় বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় শুরু হওয়া শেষ আটের প্রথম ম্যাচে পেরু টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে প্যারাগুয়েকে হারিয়ে সেমিফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ৩-৩ ব্যবধানে ড্র ছিল। 

টান টান উত্তেজনার কোপার প্রথমকো্য়ার্টার ফাইনালের শুরুতে গুস্তাভো গোমেজের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করে পেরুকে এগিয়ে নেন জানলুকা লাপাদুলা। পরে ইয়োশিমার ইয়োতুন ব্যবধান আরও বড় করেন। তবে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে গোল করে ম্যাচকে টাইব্রেকারে নেন গাব্রিয়েল আভালোস। শুট-আউটে দু’দলেরই প্রথম দুই শটে গোল হয়। প্যারাগুয়ের তৃতীয় শট নিতে এসে বল বাইরে মারেন এক্তর মার্তিনেস। সান্তিয়াগো ওরমেনোর নেওয়া পেরুর তৃতীয় শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আন্তোনি সিলভা। প্যারাগুয়ের চতুর্থ শটেও গোল করতে ব্যর্থ হন ব্রায়ান সামুদিও। সেই সুযোগে পেরুর চতুর্থ শট জালে পাঠিয়ে ব্যবধান বাড়ান রেনাতো তাপিয়া। প্যারাগুয়ের পঞ্চম শটে গোল করে লড়াইয়ে টিকে থাকেন রবের্ত পিরিস। পেরুর ক্রিস্তিয়ান কুয়েভো লক্ষ্যভেদ করতে পারলে সেখানেই জয় নিশ্চিত হতো, কিন্তু তার শট রুখে দেন গোলরক্ষক সিলভা। দু’টি শট ঠেকিয়ে নায়ক হতে পারতেন তিনি। কিন্তু সাডেন ডেথে হতাশ করেন তার সতীর্থ আলবের্তো এসপিনোলা। তার শট রুখে দিয়ে উল্টো নায়ক বনে যান পেরুর গোলরক্ষক পেদ্রো গাইয়েসে। এরপর পেরুর মিগুয়েল ত্রাওকো জালে বল পাঠালে শেষ চারের টিকিট পায় বিজয়ীরা।

টুর্নামেন্টের ‘বি’ গ্রুপ রানার্সআপ পেরু ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে। ১১ মিনিটে ডিফেন্ডার গুস্তাভো গোমেজ গোল করলে এগিয়ে যায় প্যারাগুয়ে।এসময় কর্নার থেকে ডিফেন্ডার এক্তর মার্তিনেসের হেড নিলে গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বল হাতে রাখতে পারেননি। বল যায় প্যারাগুয়ের আরেক ডিফেন্ডার গুস্তাভো গোমেজের পায়ে। তিনি খুব কাছ থেকে টোকায় বল জালে পাঠান(১-০)।দশ মিনিটের মধ্যেই সমতায় ফিরে কোপার গত আসরের রানার্সআপরা। ম্যাচের ২১ মিনিটে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে উঠে আন্দ্রে কারিয়ো একজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলমুখে বল বাড়ান। লাপাদুলার কাছে বল গেলে তিনি বাঁ পায়ের শটে গোল করে পেরুকে ম্যাচে ফেরান (১-১)।বিরতির আগেই দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় পেরু। গোলাতা সেই জানলুকা লাপাদুলা। ৪০ মিনিটে ইয়োশিমার ইয়োতুনের থ্রু বল ডি-বক্সে পেয়ে কোনাকুনি শটে দারুণ গোল করে দলকে এগিয়ে নেন লাপাদুলা (২-১)।

প্রথমার্ধের যোগকরা সময়ে (৪৫+৩ মিনিট) দশজনের দলে পরিণত হয় প্যারাগুয়ে। বল দখলের লড়াইযে প্রতিপক্ষকে হাত দিয়ে আঘাত করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন তাদের গোলদাতা গোমেজ। রেফারি তাকে লাল কার্ড দেখালে ম্যাচের অর্ধেক সময় একজন কম নিয়ে খেলতে হয় প্যারাগুয়েকে। একজন বেশি নিয়েও প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে পারেনি পেরু। উল্টো ম্যাচে ৫৪ মিনিটে সমতায় ফেরে প্যারাগুয়ে। কর্নারের বল পেরুর রক্ষণভাগ ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে জোরালো উঁচু শটে গোল করেন জুনিয়র আলোনসো (২-২)। ম্যচের ৮০ মিনিটে তৃতীয় গোল করে ফের এগিয়ে যায় পেরু। ইয়োতুনের দূর থেকে নেয়া শট একজনের গায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায় (৩-২)। তাতে নির্ধারিত সময়েই জয়ের আশা জাগে দলটির। তবে নাটকীয়তার তখনও বাকি ছিল। পাঁচ মিনিট পর দারুণ ছন্দে থাকা কারিয়ো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে পেরুও  দশজনের দলে পরিণত হয়। আর সেই সুযোগে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ফের সমতা আনে প্যারাগুয়ে। কাছ থেকে গোলটি করেন গাব্রিয়েল আভালোস (৩-৩)। কোয়ার্টার ফাইনাল শুরুর দিনেই অতিরিক্ত সময়ের নিয়ম বাতিল করায় ম্যাচ সরাসরি গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে দারুণ জয় পেয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে ওঠে  পেরু। এবার তাদের লক্ষ্য শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ।ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তারা খেলবে ব্রাজিল ও চিলির মধ্যকার ম্যাচের বিজয়ীর বিপক্ষে।