বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
বিশ্বের প্রবীণতম মানুষটি আর নেই। গত মঙ্গলবার তার জীবনাবসান হয়েছে ১১৯ বছর বয়সে। তার নাম বেন তানাকা। এত দীর্ঘ বয়সেও তার কোন শারীরিক সমস্যা ছিল না।
জাপানের নথি বলছে, ১৯০৩ সালের ২ জানুয়ারি সেদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের ফুকুওকা অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কেন। উল্লেখ্য, ওই একই বছর রাইট ভাইয়েরা প্রথম আকাশে ওড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। প্রথম মহিলা হিসেবে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন মেরি কুরি।
সম্প্রতি তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করতে হয়। সেখানেও বহাল তবিয়তেই ছিলেন বৃদ্ধা। সারাক্ষণ ইনডোর বোর্ড গেমস খেলতেন। এই খেলা তাঁর ভীষণ পছন্দের ছিল। আর ভালো লাগত অঙ্ক! হ্যাঁ। জটিল অঙ্কের সমাধান করতে ভালোবাসতেন কেন। অঙ্কের একটির পর একটি ধাপ পেরোনোর সময়ে তাঁর মুখও চলত। খেতে ভালোবাসতেন চকোলেট। আর পানীয় হিসেবে পছন্দ ছিল সোডা।
বয়স যখন অল্প ছিল, তখনও সবসময় কাজের মধ্যেই নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন কেন। তাঁর সেই গল্পের ঝুলি গোটা বিশ্বের শোনার সুযোগ হয়েছে। কেন ছিলেন পুরোদস্তুর ‘বিজনেস উওম্যান’। তাঁর নিজের নুডলস আর রাইস কেকের দোকান ছিল। ছিল আরও অনেক ব্যবসা। কেনের বিয়ে হয়েছিল ঠিক ১০০ বছর আগে। ১৯২২ সালে হিডিয়ো তানাকার সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন কেন। পরবর্তীতে চার সন্তানের জন্ম হয়। আরও একটি শিশুকে দত্তক নেন তানাকা দম্পতি।
২০২১ সালের টোকিয়ো অলিম্পিক্সে যোগদানের ইচ্ছা ছিল কেনের। তিনি সব পরিকল্পনাও সেরে ফেলেছিলেন। ঠিক করেছিলেন, হুইল চেয়ারে বসেই অলিম্পিক্সের মশাল বহন করবেন! কিন্তু, অতিমারির জেরে তাঁকে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়।
২০১৯ সালে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড (Guinness World Records)-এর পক্ষ থেকে কেনকে বিশ্বের প্রবীণতম জীবিত ব্যক্তির সন্ধান দেওয়া হয়। সেই সময় তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “আপনার এই দীর্ঘ জীবনের সেরা মুহূর্ত কোনটি?” জবাবে কেন বলেছিলেন, “এখনের এই মুহূর্তই আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত!”
নিজের রোজের রুটিন নিয়ে অত্যন্ত রক্ষণশীল ছিলেন কেন। নিয়মানুবর্তিতা পছন্দ করতেন তিনি। রোজ সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠতেন। বিকেলে নিয়ম করে অঙ্ক কষতেন এবং ক্যালিগ্রাফি অনুশীলন করতেন। এই প্রসঙ্গে গিনেস কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছিল, “অবসর কাটানোর ক্ষেত্রে কেনের অন্যতম প্রিয় অভ্যাস হল, ওথেলোর গেম। আর তিনি প্রাচীন বোর্ড গেমে অত্যন্ত পারদর্শী।”