বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: কেবল ৪২ রকমের আমদানি পণ্য নয়, সব রকমের আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার অফডকে যেতে পারবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সব ধরনের আমদানি পণ্যভর্তি কন্টেইনার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সেখানকার ১৯টি অফডকে নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে। এ অনুমোদন সাময়িক।
ভয়াবহ কন্টেইনার জটে চট্টগ্রাম বন্দরের অচলাবস্থা নিরসনে আজ বৃহস্পতিবার এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
নৌপরিবহন সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন যে আমদানি করা সব পণ্যভর্তি কন্টেইনার ডিপোতে নেয়ার অনুমোদনের ফলে বেশ সুফল পাওয়া যাবে। ১৮ হাজার কন্টেইনার অফডকসমূহে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে দু’দফায় রাজস্ব ভবনকে এ ব্যাপারে পত্র দেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হলো। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই সুবিধা কার্যকর থাকবে।
আমদানি করা পণ্য জাহাজ থেকে খালাস এবং সংরক্ষণ করে বন্দর। আর শুল্কায়ণ এবং কোথা হতে ডেলিভারি নেয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে রাজস্ব বোর্ড।
৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য অফডকসমূহে সংরক্ষণ ও সেখান থেকে ডেলিভারির অনুমোদন রয়েছে। বর্তমান সংকট নিরসনে আরও ৬টি পণ্যভর্তি কন্টেইনার সেখানে রাখা ও সেখান থেকে ডেলিভারি দেয়ার অনুমোদন দেয়া হয় সাময়িকভাবে। গত ১৮ এপ্রিল এ ব্যাপারে অফিস আদেশ হয়। কিন্তু যেসব আইটেমের অনুমোদন দেয়া হয় সেগুলোর পরিমাণ একেবারে কম। জট নিরসনে তেমন কোন সুফল মিলবে না বলে তখনই অভিমত ব্যক্ত করেন শিপিং সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় সব রকমের আমদানি পণ্যের কন্টেইনার অফডকসমূহে সংরক্ষণ, আনস্টাফিং ও ডিপো থেকে খালাসের অনুমোদন দেয়া হলো। রাজস্ব বোর্ডের (দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস নীতি) মোহাম্মদ মেহরাজ-উল-আলম সম্রাট স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ অনুমতি দেয়া হয়েছে। ৩০ জুন পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।
রাজস্ব ভবনের আদেশে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, বন্দর থেকে কন্টেইনার স্থানান্তরের সময় আবশ্যিকভাবে স্ক্যানিং করতে হবে এবং স্ক্যানিং রিপোর্ট সংরক্ষণ করতে হবে যথাযথভাবে। স্থানান্তরিত সব কমার্শিয়াল পণ্য চালান। অফডকে স্থানান্তরিত সব বাণিজ্যিক পণ্য চালান আবশ্যিকভাবে কাস্টম হাউস এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের প্রতিনিধির সমন্বয়ে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আমদানিকৃত শিল্প কারখানার কাঁচামাল বন্দর থেকে ডেলিভারি নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান থেকে চুরি এবং একেবারে উধাও করে দেয়ার ঘটনা বহু। বাণিজ্যিক পণ্য বন্দর থেকে অফডকে নেয়ার পথেও রয়েছে অনুরূপ ঝুঁকি। মাঝপথে চুরি এবং হাওয়া করে দেয়ার ঘটনা যাতে না ঘটে সেটা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা আবশ্যক বলে মনে করেন কয়েকজন শিল্প মালিক।
বর্তমানে যেসব পণ্যভর্তি কন্টেনার বন্দরে রয়েছে এবং বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজে যে ৩৬ হাজার কন্টেইনার রযেছে সেগুলোর ম্যানিফেস্ট কাস্টমস-এ পেশ হয়ে গেছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে সেসব পণ্য কোথা থেকে ডেলিভারি হবে সেটা। অধিকাংশের ডেলিভারি স্থান বন্দর। রাজস্ব বোর্ড থেকে অফিস আদেশ হলেও তাই এক্ষেত্রে অফডকে স্থানান্তরে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। অবশ্য, সি এন্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম আকতার হোসেন জানান যে রাজস্ব বোর্ডের ঐ অফিস আদেশ জারির কারণে থাকবে না ঐ জটিলতা।