Home First Lead বন্দরে যেসব কারণে বড় জাহাজ আসে না

বন্দরে যেসব কারণে বড় জাহাজ আসে না

ছবি: সংগৃহীত

বিজনেসটেুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: বন্দরের সক্ষমতা রয়েছে বড় জাহাজ ভিড়ানোর। ১৯০ মিটার লম্বা এবং ৯.৫ মিটার ড্রাফটের জাহাজ নোঙর করতে পারে জেটিতে। কিন্তু যেসব জাহাজ আসে তার অল্পকিছু বাদে সবগুলোই ১৮০ মিটারের কম।

বড় জাহাজ ভিড়ানোর সুবিধা থাকলেও ফিডার অপারেটররা এ ব্যাপারে তেমন আগ্রহী নয়। ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর সিঙ্গাপুর, কলম্বো এবং পোর্ট ক্ল্যাং থেকে চট্টগ্রামে ছোট জাহাজ অপারেট করা হয়। বর্তমানে ১৫ ফিডার অপারেটরের ১১৫ টির মত জাহাজ যাতায়াত করে ঐ ৩ বন্দর থেকে চট্টগ্রামে। এসব জাহাজে যে পরিমাণ পণ্য আসে, বড় ৮৫টি জাহাজে তা আনা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বড় জাহাজে বন্দরের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে অন্ততঃ ২০ ভাগ। আমদানি-রপ্তানিকারকদেরও তাতে সুবিধা। তা সত্ত্বেও ছোট আকারের জাহাজ অপারেট করা হয় এ পথে। এমন কি ১৪৮ মিটার, ১৬৮ মিটারের জাহাজও পণ্য নিয়ে আসে।

বড় জাহাজে বেশি পণ্য নিয়ে আসার সুবিধা সত্ত্বেও শিপিং কোম্পানিগুলো এ ব্যাপারে আগ্রহী নয় কেন জানতে চাইলে তাদের কয়েকজন নির্বাহি বললেন, ‘ আমরা আগ্রহী নই তা মোটেও সত্য নয়। আমাদেরও প্রচুর আগ্রহ। আমরা চাই বড় জাহাজে বেশি কন্টেইনার নিয়ে আসতে।’ কিন্তু বড় জাহাজ আনলে বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঝামেলা ও জটিলতা এবং ‘বিশেষ একটি খাতে’ বাড়তি খরচ। এ কারণে বন্দরের সক্ষমতাকে আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।

বিভিন্ন শিপিং কোম্পানির নির্বাহিরা এ প্রসঙ্গে আরও জানালেন, বড় জাহাজ আনলে বন্দরের সংশ্লিষ্ট বিভাগে একটি নিঃশর্ত আন্ডারটেকিং দিতে হয় যে নেভিগেশনার মুভমেন্টের কোন পর্যায়ে কোনরূপ ক্ষতি হলে তার যাবতীয় দায়-দায়িত্ব শিপিং এজেন্টের। অথচ বন্দরের পাইলটই বহির্নোঙর থেকে জাহাজকে নিয়ে আসে। তাতে কোনরূপ সমস্যা হলে সেটার জন্য বন্দর পাইলটের দায় হওয়ার কথা, আমাদের নয়।

অপরদিকে, ১৮৫ মিটারের আনলে সেক্ষেত্রে ঐ রকম কোন অঙ্গীকারনামা দিতে হয় না।  

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের একজন পরিচালক এ প্রসঙ্গে জানান, জাহাজের ড্রাফট ৯.৫ মিটার বলা হলেও তা সামনের দিকে। পেছনে তার চেয়ে ২০ সেন্টিমিটার কম। অর্থাৎ ৯.৩ মিটার। আগে এই নিয়ম ছিল না। বছর তিনেক ধরে এই নিয়ম। এই শর্তের কারণে প্রতিটা জাহাজকে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর থেকে ১০০ থেকে ১৫০ কন্টেইনার কম আনতে হচ্ছে।  তাছাড়া, আসার সময় জাহাজভর্তি কন্টেইনার পাওয়া গেলেও ফিরতি যাত্রায় পূর্ণ ক্ষমতায় বুকিং মিলে না। এসব কারণে বন্দরের সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না অপারেটররা।

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বড় জাহাজ আনার বিষয়টি নিয়ে গত ৩ মার্চ স্টেকহোল্ডারদের সাথে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তাদেরকে পর্যায়ক্রমে ছোট জাহাজের পরিবর্তে বড় জাহাজ আনতে বলা হয়েছে। ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরগুলোর সাথে বড় জাহাজের যাতায়াত হলে তাতে অপারেশনাল কার্যক্রম আরও গতিশীল হবে। তাতে কমপক্ষে ২০ ভাগ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।