Home ব্যাংক-বিমা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির বৈঠক মঙ্গলবার

বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির বৈঠক মঙ্গলবার

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: পুৃঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে বৈঠকে বসছে। এতে এক্সপোজার লিমিট, বন্ডে বিনিয়োগসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হবে।

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা গণনা নিয়ে মতভিন্নতা, শেয়ারের দর বেড়ে গেলেও এক্সপোজার লিমিট অতিক্রম করে গেলে জরিমানা, বন্ডে বিনিয়োগ পুঁজিবাজারের বিনিয়োগসীমার মধ্যে থাকবে কি না, এই নিয়ে বিতর্কের মধ্যে গত সপ্তাহে টানা দরপতন হয়েছে।

কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেছেন, বৈঠকে পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা, পুঁজিবাজারের জন্য গঠিত বিশেষ তহবিলে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ জমা, পুঞ্জীভূত লোকসান থাকলে শুধু সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেয়া ও বন্ডের বিনিয়োগসংক্রান্ত বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে।

পুঁজিবাজার নিয়ে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয় সভা প্রতিবছরই হয়। গত ১৮ মার্চ শেষবার দুই পক্ষ একসঙ্গে বসেছিল। সেই বৈঠকের পর বিএসইসির পক্ষ থেকে যে বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে দেয়া হয়, তার অনেকগুলোই পরে বাস্তবায়ন হয়নি।

সেই বিষয়গুলো ছাড়াও গত ৯ মাসে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে মতভিন্নতা তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাজার সংশোধনের মধ্যে দুই সংস্থার মতভিন্নতার কারণে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও পারছে না।

বড় বিনিয়োগকারী বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা হাত গুটিয়ে বসে আছে বলেই ধারণা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। এ অবস্থায় দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই বৈঠকের খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফেরাতে পারে।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগসীমা নিয়ে উভয়সংকটে পড়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। একদিকে বিনিয়োগ বাড়াতে বিশেষ তহবিলের কথা বলা হচ্ছে, অন্যদিকে বিশেষ পদ্ধতিতে গণনার কারণে শেয়ার দর বেড়ে গিয়ে বিনিয়োগসীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণে গুনতে হচ্ছে জরিমানা।

আইন অনুযায়ী, একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার মোট মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। আর শেয়ারের ধারণকৃত মূল্য নির্ধারণ করা হয় বাজারমূল্যের ভিত্তিতে। আর এখানেই বিপত্তি।

ব্যাংক তার বিনিয়োগসীমার মধ্যেই শেয়ার কিনলেও তার দাম বেড়ে গেলে বাজারমূল্যের ভিত্তিকে বিনিয়োগ গণনার কারণে বিনিয়োগসীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকগুলো তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে আগেভাগেই। এতে পুঁজিবাজারে বিক্রয় চাপ তৈরি হচ্ছে। এর ফলে বাজারে হচ্ছে দরপতন।

এমনিতেই প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অভাবে ভুগতে থাকা পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলো নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় গেছে, সেটি বাজারে দরপতনকে ত্বরান্বিত করতে পারে, যেটি দেখা যাচ্ছে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে পুঁজিবাজারে উত্থানে সূচক বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এতে বিনিয়োগকারীরা হাতের হারিয়ে ফেলা টাকা ফিরে পেতে শুরু করে।

তবে এক দশক পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচক ৭ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে মূলত ব্যাংকের শেয়ারের বিক্রয় চাপে সূচকের নিম্নগতি দেখা দেয়।

এই সময়ের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত ব্যাংকগুলোকে হাতের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিতে বাধ্য করেছে। এর ফলে দরপতনের বৃত্ত থেকে বের হতেই পারছে না পুঁজিবাজার। শেয়ার দর কমে আসায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।