বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনা আবহের শুরু থেকেই গবেষকরা দাবি করে এসেছিলেন এই ভাইরাস হাঁচি , কাশি বা পারস্পরিক স্পর্শ থেকে ছড়ায়। বাতাসে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট জার্নালের এক রিপোর্ট উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলের।
প্রাথমিক ভাবে বাতাসেই ছড়ায় করোনা ভাইরাস, এমনটাই দাবি করা হয়েছে ল্যানসেটের সাম্প্রতিক রিপোর্টে। নিজেদের এই দাবির পিছনে যুক্তিও খাড়া করেছেন গবেষকরা। মোট ১০টি কারণ তাঁরা দেখিয়েছেন যা থেকে স্পষ্ট হয় যে, সার্স কোভিড ১৯ ভাইরাস বাতাসে উড়ে বেড়াতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব কোভিড নিরাপত্তা-বিধি পরিবর্তন করার কথাও বলেছেন তাঁরা।
ল্যানসেটের রিপোর্টটি তৈরি করেছেন ব্রিটেন, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার বিশিষ্ট ৬ জন গবেষক। তাঁদের দাবি, করোনা যে বায়ুবাহিত নয়, তেমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। বরং বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণ উল্টো কথাই বলছে।
নিজেদের দাবির পিছনে কোন কোন কারণ দেখিয়েছেন গবেষকরা? তাঁরা বলেছেন, কোয়ারানটাইন হোটেলে পাশাপাশি ঘরে থাকা লোকজন যদি একে অন্যের সামনে নাও থাকেন, তবু তাঁদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত হতে দেখা গেছে। অন্তত ৩৩ থেকে ৫৯ শতাংশ কেসের ক্ষেত্রে হাঁচি বা কাশির মতো উপসর্গ না থাকলেও, করোনা রোগীর শরীর থেকে ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। ভাইরাস যদি বায়ুবাহিত না হত তবে এই সংক্রমণ ঘটত না।
এ পর্যন্ত যত করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে বেশিরভাগ আক্রান্তই ঘরে বসে বসে সংক্রমিত হয়েছেন। বাইরে না বেরিয়েই ভাইরাস তাঁদের দেহে বাসা বেঁধেছে। হাসপাতাল গুলিতে পিপিই কিট ব্যবহার সত্ত্বেও সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি বলেই দাবি করেছেন ল্যানসেটের গবেষকরা।
তাঁদের আরও দাবি, কোভিড ভাইরাস ল্যাবরেটরি গবেষণায় বাতাসে উড়তেও দেখা গেছে। বায়ুবাহিত অবস্থাতেও তাদের সংক্রমণ ক্ষমতা ছিল অনন্ত ঘণ্টা তিনেকের জন্য সক্রিয়। ল্যানসেটের এই রিপোর্টের পর, বিশ্বজুড়ে প্রচলিত করোনা বিধিতে যে বদল আসতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর ফলে নিজের বাড়ির ভিতরেও সারাদিন মাস্ক পড়ে থাকার নিয়ম চালু হতে পারে। বিভিন্ন দেশেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। সংক্রমণের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। এমতাবস্থায় ল্যানসেটের রিপোর্ট যে উদ্বেগের পারদ চড়িয়ে দিল আরও খানিকটা।