Home First Lead বান্দরবানের সোনালী ব্যাংকের ৬ শাখায় লেনদেন স্থগিত

বান্দরবানের সোনালী ব্যাংকের ৬ শাখায় লেনদেন স্থগিত

ছবি সংগৃহীত

রুমা শাখার ভোল্টের টাকা অক্ষত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

বান্দরবানা: ডাকাতির ঘটনার জেরে কর্তৃপক্ষ সোনালী ব্যাংকের বান্দরবানের উপজেলা পর্যায়ের ৬ শাখায় লেনদেন সাময়িক স্থগিত করেছে। একইসঙ্গে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির ১৯ এবং খাগড়াছড়ির ৯শাখায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সতর্কভাবে লেনদেন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে সোনালী ব্যাংকের জিএম (দক্ষিণ) সাইফুল আজিজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নতুন সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট  (কেএনএফ)। ২৪ ঘণ্টায় রুমা ও থানচি উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের দুটি ও কৃষি ব্যাংকের একটি শাখায় হামলা ও লুটপাট চালায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ভল্টের চাবি না দেয়ায় শাখা ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে তারা। ব্যাংকের তিনটি শাখা থেকে নিরাপত্তা রক্ষীদের ১৪টি অস্ত্র ও ১৭ লক্ষাধিক টাকা লুট করেছে। মারধর করেছে পাশের মসজিদের মসুল্লিদেরও। তাণ্ডব চালিয়েছে আশপাশের দোকানেও। লুটপাটের পর ফাঁকা গুলি ছুড়ে চাঁদের গাড়িতে করে পালিয়ে যায় তারা। এ ঘটনার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে ৬ শাখায় লেনদেন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে বান্দরবানের থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা গ্রাহকদের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রুমায় সোনালী ব্যাংক থেকে অস্ত্র লুট করে সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল।

রুমা শাখা সোনালী ব্যাংকের ভল্টে থাকা ১ কোটি ৫৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।

রুমা পরিদর্শন করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সাথে বান্দরবানের সেনাবাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মেহেদী হাসান, জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, বিজিবির সেক্টর কমান্ডার,
চট্টগ্রাম পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো: সৈকত শাহীনসহ বিজিবি, পুলিশ, র‍্যব আনসার ভিডিপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশের মহাপরিদর্শক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, কোনো সন্ত্রাসীকেই ছাড় দেয়া হবে না। যারা ব্যাংকে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। এলাকার মানুষের নিরাপত্তায় কাজ করে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছ। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশের মহাপরিদর্শক জানিয়েছেন।

অপহৃত রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি। ব্যাংকে হামলার পর সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। রাতে এ ঘটনার পর পুরো রুমও উপজেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ব্যাংক ম্যানেজার উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

ঘটনার প্রতিবাদে রুমা উপজেলার সাথে বান্দরবানের সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ম্যানেজারের মুক্তির দাবিতে রুমা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপজেলা প্রাঙ্গণ মানববন্ধন করেছে। তারা অবিলম্বে ম্যানেজারকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছে। ঘটনার পর বান্দরবানের রুমা উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সন্ধ্যার আগেই বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে থানচিতেও চলছে একই অবস্থা। এ দুটি উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা আরো বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে এ আশঙ্কায় সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ সেনাবাহিনী আনসার বাহিনীর বাড়তি সদস্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা হয়েছে উপজেলায়।