Home First Lead ডলারের অভিন্ন মূল্য চান রপ্তানিকারকরা

ডলারের অভিন্ন মূল্য চান রপ্তানিকারকরা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: রপ্তানি আয় নগদায়নের ক্ষেত্রে ডলারের দাম বর্তমানের চেয়ে বেশি চান রপ্তানিমুখী নিট পোশাকশিল্পের মালিকেরা। এ ছাড়া তারা দাবি করেছেন, ডলারের বিনিময়মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) পাশাপাশি রপ্তানি খাতের বৃহৎ বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বিকেএমইএ ও বিজিএমইএর মতামতকে যথার্থ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। ডলারের মূল্য নির্ধারণের এখতিয়ার থাকবে শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে চিঠি দিয়ে এসব দাবির কথা জানিয়েছেন নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। চলতি সপ্তাহে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানির অর্থ পরিশোধ ৬০-১৮০ দিন পর্যন্ত পিছিয়ে দিচ্ছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে কাঁচামাল আমদানির দেনা পরিশোধে সময় পাওয়া যাচ্ছে ৯০-১২০ দিন। আমদানির দেনা পরিশোধের জন্য প্রতি ডলারের দাম ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা আছে। তবে বাস্তবে ১০৫-১০৬ টাকায় ডলার কিনে আমদানির দায় মেটাতে হচ্ছে। ডলারের বিনিময় হারের এ নীতিগত প্রক্রিয়াতেই তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকেরা বড় অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে বছর শেষে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়বেন। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আগের মতো রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) মাধ্যমে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের দেনা পরিশোধ সমন্বয় করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া উচিত।

গভর্নরকে লেখা চিঠিতে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ডলারের ক্রয় ও বিক্রয়মূল্য কোনোভাবেই এক টাকা বেশি পার্থক্য হওয়া উচিত নয়।

চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে প্রবাসী আয় ও পণ্য রপ্তানির আয় সমানভাবে অবদান রাখে। তবে সম্প্রতি এবিবি ও বাফেদা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের ডলারের পৃথক বিনিময় হার নির্ধারণ করে। প্রবাসী আয়ে ডলারের সর্বোচ্চ বিনিময় হার করা হয়েছে ১০৮ টাকা। এর সঙ্গে রয়েছে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা। এতে প্রবাসীরা প্রতি ডলারের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৭০ পয়সা পর্যন্ত পাচ্ছেন। রপ্তানিকারকেরা পান ৯৯ টাকা। ফলে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় নগদায়নের ক্ষেত্রে ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৭০ পয়সা। এ ধরনের বৈষম্যমূলক বিনিময় হার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের ডলারের বিনিময়মূল্য একই হওয়া উচিত।

গত বছরের এপ্রিল থেকে দেশে ডলারের সংকট শুরু হয়। এরপর ডলারের দাম ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫ টাকা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার থেকে কমে হয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে একের পর এক সিদ্ধান্ত নিলেও সংকট কমেনি।