বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
মিয়ানমারে জান্তা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে দুই জন নিহত হয়েছেন এবং বহু আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন অর্ধশতাধিক।
রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আন্দোলনকারী নিহত এবং আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মিয়ানমার পুলিশ ররিবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। ইয়াঙ্গুন ও দাউই শহরে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে স্টান গ্রেনেড এবং টিয়ার গ্যাস ছুড়ে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পুলিশের এমন অভিযান চলাকালে দুই প্রতিবাদকারী মারা গেছেন।
‘দ্যা মিয়ানমার নাউ’ মিডিয়া গ্রুপ ইয়াঙ্গুনের হিলডান সেন্টার মোড়ের কাছে রাস্তায় পড়ে থাকা একজন ব্যক্তির একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাকে গুলি করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি ফ্রন্টিয়ার ম্যাগাজিনকে বলেছেন, একটি বাস স্টেশনে আশ্রয় নেওয়া প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। সেই ঘটনায় একজন প্রাণ হারিয়েছেন। সেই সঙ্গে অনেক মানুষ আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে দিনভর দেশটির প্রধান শহরগুলোতে অব্যাহত ছিল জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। তবে, এদিন কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
দাওয়েই শহরে, বিক্ষোভকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করতে গেলে বাধা দেয় দাঙ্গা পুলিশ। একপর্যায়ে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এতে অন্তত নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশপাশি বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন বলে খবর পাওয়া গেছে। এসময় গ্রেপ্তার হন অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী।
মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ম্যান্দালেতে এদিন সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও। এ সময় হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার দিয়ে জান্তা সরকারবিরোধী স্লোগানের পাশাপাশি অবিলম্বে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
এদিকে সামরিক অভ্যুত্থানের সমালোচনা করে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন সংস্থাটিতে নিযুক্ত দেশটির স্থায়ী প্রতিনিধি কিয়াও মো। একই সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে না দেয়া পর্যন্ত দেশটির জান্তা সরকারকে কোন ধরনের সহায়তা না করতেও বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান কিয়াও মো।
জাতিসংঘ দূতের এমন অভ্যুত্থানবিরোধী বক্তব্যের একদিন পরই তাকে বহিষ্কার করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় রাতে এ খবর জানায় দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। এ সময় আরও জানানো হয়, জাতিসংঘে নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে কিয়াও মো দেশের সঙ্গে বেঈমানি করেছেন। সংস্থাটির স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলেও খবরে উল্লেখ করা হয়।
