বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
টকটকে লাল গোটা আকাশ! যেন কেউ রক্ত লেপে দিয়েছে। কিংবা আকাশটাই ক্যানভাস। তুলির টানে গাঢ় লালে রাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরোটা। রাতের আকাশ দেখলে কেউ হাঁ হয়ে তাকিয়ে থাকছেন। কেউ বা বলছেন ভুতুড়ে। কারও দাবি, এ যেন মহাপ্রলয়ের আগের মুহূর্ত!
প্রাথমিকভাবে বুলগেরিয়ার উত্তর-পূর্ব অংশে দেখা গিয়েছিল অসামান্য এই মেরুজ্যোতির। তবে অল্পক্ষণের মধ্যেই তা গোটা বলকান অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু বুলগেরিয়া নয়, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিক, ইউক্রেন, পোল্যান্ড এবং স্লোভাকিয়াতেও দেখা গেছে সুমেরুপ্রভা। শনিবার রাতে ব্রিটেনের বেশ কিছু অংশেও উজ্জ্বল লালা-সবুজ অরোরা বোরিয়ালিসের দেখা মিলেছে। প্রকৃতির সেই আর্শ্চয সৃষ্টি দেখলে যেন সব জাগতিক জিনিস ভুলে যাওয়া যায়, দমবন্ধ করে শুধুই তাকিয়ে থাকতে হয়।
চলতি বছরের শুরুতে অরোরা বোরিয়ালিস ভারতে প্রথমবারের মতো দেখা গিয়েছিল। লাদাখে এই বিরল দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। সাধারণত ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সময় সৃষ্টি হয় মেরুপ্রভা। এই মহাজাগতিক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে যখন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ভারসাম্য কোনওভাবে নষ্ট হয়। তার ফলে পৃথিবীর উচ্চ এবং নিম্ন অক্ষাংশের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে উজ্জ্বল প্রভা দেখা যায়। সুমেরুপ্রভা সাধরণত দেখা যায় উত্তর মেরুর কাছাকাছি এলাকাগুলিতে। কুমেরুপ্রভা বা অরোরা অস্ট্রালিস দেখা যায় দক্ষিণ মেরু সংলগ্ন এলাকায়। তবে কখনও কখনও নাতিশীতোষ্ণ এলাকাগুলিতেও মেরুপ্রভা দেখা যায়।
সূর্য থেকে উৎপন্ন সৌর বায়ু কণার মিথস্ক্রিয়ার ফলেই সৃষ্টি হয় এই অপরূপ জ্যোতি। এই কণাগুলি পৃথিবীতে পৌঁছানোর আগে লক্ষ লক্ষ মাইল ভ্রমণ করে। নীলগ্রহে প্রবেশ করার পর পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র এই কণাগুলিকে মেরু অঞ্চলের দিকে পরিচালিত করে। মেরুপ্রভার এই অনন্য রং নির্ভর করে বেশ কিছু জিনিসের উপর। যেমন এই কণাগুলি বায়ুমণ্ডলের কোন গ্যাসের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া ঘটাচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে জ্যোতির রঙ লাল হবে না সবুজ। সাধারণত নাইট্রোজেনের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া হলে মেরুজ্যোতির রং হয় টকটকে লাল। আর অক্সিজেনের ক্ষেত্রে সেই রং ই হয়ে যায় উজ্জ্বল সবুজ।