Home পরিবেশ বেড়েই চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা, ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা

বেড়েই চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা, ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কায় বিশেষজ্ঞরা

বিজনেসটেুডে২৪ ডেস্ক

প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। যেদিন থেকে বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরু হয়েছে সেদিন থেকে এখনও পর্যন্ত সেপ্টেম্বর মাসে সবথেকে বেশি তাপমাত্রা দেখা গিয়েছে চলতি বছর। এমনটাই জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ওয়েদার সার্ভিস কোপারনিকাস’স ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস বা সি৩এস।

জানা গিয়েছে, পৃথিবী জুড়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের গড় তাপমাত্রা ০.০৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ২০১৮ সালের তুলনায় আবার ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গড় তাপমাত্রা বেড়েছিল ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুধুমাত্র ইউরোপীয় দেশগুলিতে নয়, মধ্য প্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও সাইবেরিয়ান এলাকাতেও এই সেপ্টেম্বর মাস এখনও পর্যন্ত উষ্ণতম।

 

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যেভাবে উষ্ণতা বাড়ছে তা খুবই চিন্তার বিষয়। কারণ তার ফলে জলবায়ুতেও বিস্তর পরিবর্তন হচ্ছে। আর এসবের প্রভাব সরাসরি পড়ছে মানব সভ্যতার উপর। যদিও এই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য একটা বড় অংশে দায়ী মানুষ নিজেরাই।

করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর ফলে চলতি বছর মার্চ মাস থেকেই বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই লকডাউন করা হয়েছে। তার ফলে রাস্তাঘাটে যানবাহন অনেক কম বেরিয়েছে। তারপরেও তাপমাত্রা বেড়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এর একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, তুন্দ্রা এলাকা ও উত্তর আমেরিকায় দাবানল। এই দাবানলের ফলে একরের পর একর এলাকা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে তা আরও শুষ্ক হয়েছে। তার একটা প্রভাব তাপমাত্রা বাড়ার উপরেও পড়েছে।

শুধুমাত্র গড় তাপমাত্রা নয়, দৈনিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতেও রেকর্ড গড়েছে এই বছর। চলতি বছর অগস্ট মাসে আমেরিকার ডেথ ভ্যালিতে তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৫৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

কোপারনিকাস’স ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস জানিয়েছে, চলতি বছর সুমেরু ও কুমেরুতে বরফ গলার হারও অন্য সব বছরের থেকে বেশি। এই এলাকাগুলির তাপমাত্রাও অন্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে এই বছর। ৩ মিলিয়ন বছরে এত বেশি তাপমাত্রা এর আগে দেখা যায়নি। আর তার প্রভাব পড়েছে মেরু ভল্লুক, সিল ও অন্যান্য জীবজন্তু ও উদ্ভিদদের উপর।

 

আর এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে আরও অনেক জলবায়ুগত ঘটনা দেখা যাচ্ছে যা আগে এতটা দেখা যেত না। তার মধ্যে অন্যতম হল ঘূর্ণিঝড়। শুধুমাত্র ভারতবর্ষে নয়, গোটা বিশ্বে ঘূর্ণিঝড় বাড়ছে। আগে যেখানে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে বছরে একটা বা দুটো ঘুর্ণিঝড় তৈরি হত, তার সংখ্যা বর্তমানে অনেক বেড়ে গিয়েছে। শুধু সংখ্যা বেড়ে যাওয়া নয়, তার গতি ও শক্তি আগের থেকে অনেক বেশি হচ্ছে। আমেরিকাতেও হারিকেনের সংখ্যা অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে।

এছাড়া বজ্রপাতের সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেড়ে গিয়েছে। ভারতের বিহার ও উত্তরপ্রদেশে একদিনে বজ্রপাতে ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা আগে দেখা এত বেশি পরিমাণে দেখা যেত না। আবার তাপমাত্রা বাড়ার ফলে যেমন ক্ষরার প্রবণতা বাড়ছে, তার ঠিক উল্টোদিকে গিয়ে বন্যাও বাড়ছে। অর্থাৎ পৃথিবীর জলবায়ুগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আর তার জন্য একমাত্র দায়ী উষ্ণতা বৃদ্ধি।