পঞ্চগড় থেকে রবিউল ইসলাম রিপন: পঞ্চগড়ের বোদায় কমলা, স্ট্রবেরি ও চা চাষের সাফল্যের পর নতুন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে পুষ্টি ও ঔষধিগুণসমৃদ্ধ ড্রাগন ফল চাষ।শুরুটা শখের বসে হলেও সাফল্যের সঙ্গে এখন বাণিজ্যিক ভাবে গড়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের বাগান। এসব বাগানে প্রচুর ফল ধরেছে। তরতাজা এই ফলের প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব বাগানে প্রচুর ফল ধরেছে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসে বাগান থেকেই ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। কথা হয় উপজেলার নয়াদীঘি গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রাশেদ প্রধানের সাথে। জানান, শখের বসে তিন বছর আগে অল্প জমিতে ড্রাগন চাষ করে সাফল্য পান। তিনি বাণিজ্যিক আকারে তিন একর জমিতে ড্রাগন বাগান করেন। এই বাগানে তার ৪ হাজার গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। তিন বছর আগে রোপণকৃত বাগান থেকে গত বছর প্রথম ফল ধরে। প্রথম বছরই তিন লাখ টাকার ফল বিক্রি করেন তিনি। এ বছর এখন পর্যন্ত দুই লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন তিনি। এখনো ১৫ লাখ টাকার বেশি ফল গাছে ধরে আছে।
উপজেলার কালিয়াগঞ্জ এলাকার চাষি আব্দুস সাত্তার ওরফে আফ্রিকান সাত্তার এক একর জমিতে ড্রাগনের চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি দেড় লাখ টাকা খরচ করে পাঁচ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করছেন এই চাষি। অনুকূল আবহাওয়া এবং লাভজনক হওয়ার কারণে জেলার অনেকেই এখন ড্রাগন ফলের চাষ করছে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন অর রশিদ জানান, বর্তমানে অনেক চাষি গতানুগতিক চাষাবাদ থেকে বের হয়ে আধুনিক ফসল উৎপাদনে এগিয়ে আসছেন। এসব চাষিদের প্রযুক্তিগত সহায়তা সহ সার্বিক বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করছে কৃষি অধিদপ্তর।
তিনি জানান, এ উপজেলার মাটি ড্রাগন চাষের উপযোগী। অধিক পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও প্রচুর ঔষধিগুণ থাকায় এ ফলের চাহিদা অনেক বেশি। এই ড্রাগন চাষের সাফল্যে জেলা ও উপজেলার সৌখিন কৃষকেরা এখন পুরোনো গতানুগতিক কৃষি ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সময়ের প্রয়োজনে এবং চাহিদার কথা বিবেচনা করে লাভজনক কৃষিপণ্য উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে পড়েছেন। দৃষ্টিনন্দন এই ড্রাগন বাগানগুলি এখন দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। ক্রেতারা প্রতিদিনেই ফল কিনতে বাগানে আসছেন। প্রান্তিক এই জনপদের চাষিদের অব্যাহত প্রচেষ্টা সফল হলে এর সুফল গ্রামীণ এই জনপদে অর্থনীতির মাইলফলক হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেজ্ঞরা।