বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চলতি বছরে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মুদ্রার তুলনায় ভারতের টাকার হাল (Bearish Rupees) বেশ খারাপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন টাকাই হল ‘এশিয়াজ ওয়র্সট পারফরমিং কারেন্সি’। বর্তমান আর্থিক বছরে ভারতের শেয়ার বাজার থেকে যে পরিমাণ বিদেশি পুঁজি বিদায় নিয়েছে, তার মুল্য ৪০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর ফলে চলতি ত্রৈমাসিকে টাকার দাম কমেছে ২.২ শতাংশ।
গোল্ডম্যান সাচস ইনকর্পোরেটেড এবং নমুরা হোল্ডিংস ইনকর্পোরেটেডের মতে, ওমিক্রনের ধাক্কায় আগামী দিনে আরও নিম্নগামী হতে পারে শেয়ার সূচক। এরপরেই বিভিন্ন বিদেশি তহবিল ভারতের বাজারে শেয়ার বেচে ফেলতে শুরু করে। এছাড়া ভারতের বাণিজ্যিক ঘাটতির পরিমাণও এখন বিপুল। টাকার দাম কমে যাওয়ার পিছনে সেটাও একটা কারণ।
মুম্বইয়ে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক লিমিটেডের গ্লোবাল মার্কেট শাখার প্রধান বি প্রসন্ন বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আর্থিক নীতি ও কারেন্ট অ্যাকাউন্ট গ্যাপ আগামী দিনে টাকার দাম কমাবে। টাকার দাম কমলে বাড়তে পারে রফতানি। অতিমহামারীর ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতির পক্ষে তা বিশেষ লাভজনক হতে পারে। কিন্তু টাকার দাম কমলে আমদানি করা পণ্যের জন্য খরচ হবে আগের চেয়ে বেশি। তাতে অর্থনীতির ক্ষতি হবে। অর্থাৎ টাকার অবমূল্যায়নের ভাল ও খারাপ, দু’টি দিকই আছে। সেজন্য বিশেষজ্ঞরা মুদ্রার দাম কমার বিষয়টিকে দু’দিকে ধারওয়ালা তলোয়ারের সঙ্গে তুলনা করেন।
কোয়ান্টআর্ট মার্কেট সলিউশনের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী বছর মার্চের শেষে এক ডলারের দাম হবে ৭৮ টাকা। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিলে এক ডলারের দাম হয়েছিল ৭৬.৯০৮৮ টাকা। ব্লুমবার্গের মতে, আগামী দিনে এক ডলারের দাম হবে ৭৬ টাকা ৫০ পয়সা। গত চার বছর ধরেই কমছে টাকার দাম। চলতি বছরে ওই মুদ্রার দাম চার শতাংশ কমবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
বিদেশি তহবিল ভারতের শেয়ার বাজার থেকে সরে যাওয়ার ফলে সেনসেক্সের পতন হয়েছে ১০ শতাংশ। টাকার দাম কমার ফলে নভেম্বরে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছিল ২৩০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ ১ লক্ষ ৭৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর আগে কখনই বাণিজ্য ঘাটতি এত বেশি হয়নি।
পর্যবেক্ষকদের আশা, আগামী দিনে বিদেশি পুঁজি ফিরে আসবে। তার ফলে চাঙ্গা হবে শেয়ার বাজার। দাম বাড়বে টাকারও। সোমবার টাকার দাম ০.২ শতাংশ বেড়েছে। এদিন এক ডলারের দাম ছিল ৭৫.৯১৬৩ টাকা।