জাতীয় পরিচয়পত্রে রফিকুল ইসলামের জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১৯১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। সেই হিসাবে তাঁর বর্তমান বয়স হয় ১০৪ বছর ৬ মাস। কিন্তু বাস্তবে তাঁর বয়স ৪৩ থেকে ৪৫ বছরের বেশি নয়।
কুড়িগ্রাম থেকে নয়ন দাস: কুড়িগ্রামের তিলাই ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম ও তাঁর মা সূর্যভান বেগম। মায়ের জন্মের ৩৭ বছর আগে জন্ম হয়েছে সন্তানের। বাস্তবে এমন ঘটনা ঘটার সুযোগ না থাকলেও জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুলের কারণে এমন অসম্ভব ঘটনা সম্ভব হয়েছে।
পশ্চিম ছাটগোপালপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম ও তাঁর মা মোছাঃ সূর্যভান বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অক্ষরজ্ঞানহীন রফিকুল ইসলাম তাঁর প্রকৃত জন্ম তারিখ জানেন না। তবে তাঁর মা সূর্যভান বেগম নিশ্চিত করে বলেন, রফিকুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের কয়েক বছর পর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে রফিকুল ইসলামের জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১৯১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। সেই হিসাবে তাঁর বর্তমান বয়স হয় ১০৪ বছর ৬ মাস। কিন্তু বাস্তবে তাঁর বয়স ৪৩ থেকে ৪৫ বছরের বেশি নয়।

অন্যদিকে, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে রফিকুল ইসলামের মায়ের জন্ম ১৯৫৫ সালের ২১ মার্চ। সেই হিসাবে রফিকুল ইসলাম তাঁর মায়ের জন্মের সাড়ে ৩৭ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেছেন।
এ ছাড়া রফিকুল ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলের শেষ নেই। তাঁর নাম লেখা হয়েছে রফিকুল ইসরাম। আবার তাঁর মায়ের নাম মোছাঃ সূর্যভান বেগমের পরিবর্তে মোছাঃ সূর্যভান লেখা হয়েছে। বেগম উধাও হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম জানান,‘আমার নাম, মায়ের নাম ও জন্ম তারিখ জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল লেখা হয়েছে। জন্ম তারিখের ভুল আমাকে মায়ের চেয়ে সাড়ে ৩৭ বছরের বড় বানিয়ে দিয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধন করতে বিভিন্ন কাগজপত্র ও সময় লাগে। আমি লেখাপড়া জানি না, আমার কোনো কাগজপত্র নাই। এই ভুলের খেসারত কে দেবে?’

স্থানীয় বাসিন্দা আলম হোসেন, আবু শামা ও মিন্টু বলেন, ‘নির্বাচন অফিসের সচেতনতার অভাবে এমন হাস্যকর ভুলের সৃষ্টি হয়েছে। একটি পরিচয়পত্রে তিনটি ভুল। এই ভুলের কারণে রফিকুল ও তাঁর মা বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘ছেলে তাঁর মায়ের চেয়ে বড় এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করলে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে দেওয়া হবে।’