বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
করোনার টিকা বন্টন শুরু হলেও যে ভাইরাস তাড়াতাড়ি বিদায় নেবে এমনটা নয়। সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।
এ বছরের শেষে বা আগামী বছরের গোড়া থেকেই টিকাকরণ শুরু হয়ে যাবে কয়েকটি দেশে। টিকার বিতরণ নিয়ে বড়সড় কর্মসূচীও তৈরি। এমন পরিস্থিতিতেই হু-প্রধান টেড্রস অ্যাডহানম ঘেব্রেইসাস বললেন, টিকা এলেও যে চটজলদি ভাইরাস থেকে মুক্তি মিলবে তেমন মনে করার কারণ নেই। এ সংক্রমণ এখনই থামবে না।
ভ্যাকসিনেও যে পুরোপুরি রোখা যাবে না করোনাকে এমন সম্ভাবনার কথাও আগেও বলাবলি করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকায় এখনই সংক্রমণের কার্ভ চরচর করে বাড়ছে। দু’দিনে সংক্রমণ রেকর্ড ছাড়িয়েছে। শীতে করোনাভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ মিলে টুইনডেমিক পরিস্থিতির শঙ্ক রয়েছে। সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই শীতকে ‘ডার্ক উইন্টার’ বলছেন। দেশের প্রতি নাগরিকের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন।
হু প্রধান বলছেন, ভ্যাকসিনে ভাইরাসের থেকে সাময়িক নিষ্কৃতী মিললেও তাকে পুরোপুরি নির্মূল করে ফেলা হয়ত সম্ভব হবে না। টেড্রস আগেও বলেছিলেন, সর্দি, জ্বরের মতো করোনাও মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসের অঙ্গ হয়ে যাবে। এইচআইভি, হাম, চিকেনপক্সের মতো সতর্কতা দিয়েই তাকে রোখা যাবে, কিন্তু পুরোপুরি নির্মূল করা হয়ত যাবে না। রুটিন চেকআপ, বছরে একবার বা দু’বার ভ্যাকসিন অথবা কোভিড প্রতিরোধী ওষুধ খেয়েই ভাইরাসের মোকাবিলা করতে হবে।
‘ভ্যাকসিন মানে জিরো কোভিড নয়’, সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও জরুরি বিভাগের ডিরেক্টর মাইক রায়ান। তাঁর মতে, ভ্যাকসিন করোনা বধের শক্তিশালী অস্ত্র হবে ঠিকই, কিন্তু পুরোপুরি রোগ সারানো সম্ভব হবে না এখনই। কারণ, এই ভাইরাস মানুষের শরীরে ঢোকা ও টিকে থাকার কৌশল শিখে ফেলেছে। জিনের গঠন বদলে বদলে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে পৌঁছবার উপায়ও আয়ত্ত করেছে। যেভাবে এই ভাইরাস তার রূপ বদলে ছড়িয়ে পড়ছে তাতে এখনই তার শক্তি কমে যাওযার সম্ভাবনা খুবই কম। অতিমহামারী শেষের দিকে এমনটা ভাবাও ভুল, বলেছেন রায়ান। তাঁর দাবি, হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলিতে এখনও যথেষ্ট চাপ রয়েছে। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই ভ্যাকসিন এলেও সচেতনতা বজায় রাখতে হবে একইভাবে। কোভিড টেস্ট করাতে হবে রুটিন চেকআপের মতোই। ভ্যাকসিন চলে এলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তার সঠিক ডোজ নিতে হবে। দরকার সোশ্যাল ডিস্টেন্সিংও।