কলকাতা: বুধবারই চাঁদে পা রেখেছে চন্দযান-৩। উত্তরণের সেই ক্ষণ এখনও গর্বের আলোয় ভরে রেখেছে গোটা ভারতের মানুষকে। প্রদীপের নীচেই অন্ধকারের মত সেই দেশে সাপের ছোবলে অসুস্থ শিশুর প্রাণরক্ষা না করতে পেরে দেহ কলার ভেলায় ভাসিয়ে দিলেন বাবা-মা। মনসামঙ্গল কাব্যের বেহুলার মত।
কাকদ্বীপের প্রসাদপুরে ঘর ছিল বছর আড়াইয়ের শিশুটির। মঙ্গলবার রাতে ভাত খাওয়ানোর সময় তরকারি ফুরিয়ে যাওয়ায় মেয়েকে ঘরে রেখে রান্নাঘরে গিয়েছিলেন মা।
আবার তরকারি নিয়ে ঘরে ফেরার মধ্যেই ঘরে থাকা একটি সাপ ছোবল মারে শিশুটিকে। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। সময় নষ্ট না করেই বাবা-মা প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে ছোটেন কাকদ্বীপ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে । সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু হলেও বাঁচানো যায়নি তাকে। এরপরেই তার দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিজনদের হাতে।
মেয়ের নিথর দেহ নিয়ে বাড়ি চলে আসেন বাবা-মা। কিন্তু দেহ সৎকার করেননি তাঁরা। বুধবার সকালে মৃত শিশুকন্যার দেহ কলার ভেলায় মুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দেন তাঁরা। মেয়ে যদি প্রাণ ফিরে পায় সেই আশায়। ঠিক যেমন মনসামঙ্গল কাব্যে সর্প দংশনে মৃত লখিন্দরকে নিয়ে ভেলায় ভেসেছিলেন স্ত্রী বেহুলা।
বৃহস্পতিবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। হারউড পয়েন্ট থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। শিশুটির বাবা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। মা বলেন, “ভগবানের ভরসাতেই মেয়ের দেহ ভেলায় ভাসিয়েছিলেন। যদি সে বেঁচে ওঠে এই আশায়।”