চট্টগ্রাম: আতংক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাস এবং মশার উপদ্রব থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি আজ রবিবার মেয়রের কার্যালয়ে মতবিনিময়কালে উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
এ সময় বলেন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে আমরা চট্টগ্রামের জনগন খুবই উদ্বিগ্ন। চট্টগ্রামও ঝুঁকির বাহিরে নয়। তাই আমরা চট্টগ্রামের জনগনও এ ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে কর্পোরেশনের কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন এখন নালা নর্দমায় মশার লার্ভা বেড়ে গিয়ে মশার উৎপাত বাড়ছে। আর বিভিন্ন গবেষনা মারফত আমরা জানতে পেরেছি এবার ডেঙ্গু মশার উপদ্রবও বাড়বে। নগরবাসী অস্বস্তিতে রয়েছে। তিনি মশার উৎপাত থেকে নগরবাসীকে রক্ষা করতে মশক নিধন কার্যক্রম গতিশীল করার অনুরোধ জানান। এছাড়া করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রতিদিন দুইবেলা ময়লা আবর্জনা অপসারণ করার জন্য মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষন করেন এবং ময়লা আবর্জনা অপসারণ করে যাতে দূর্গন্ধ না ছড়ায় সেজন্য নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ছিটানোর আহবান জানান।
তাছাড়া ময়লা আবর্জনা পরিবহনকালে ত্রিপল ব্যবহার, নগরীর বাজারসমূহ নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে উচ্ছিষ্ট ময়লা আবর্জনাসমূহ প্রতিদিন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করন এবং খোলা স্থানে গবাদি পশু জবাই না করার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য চসিক মেয়রের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বাজারের মাছ, মাংস বিক্রেতা এবং মাছ কাটার সাথে নিয়োজিত ব্যাক্তিদের হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করতে উৎসাহিত করার আহবান জানান। নগরীর চলমান অসমাপ্ত উন্নয়ন কর্মকান্ড দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার জন্য মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন জনদুর্ভোগ লাঘবে নাগরিক উদ্যোগের গৃহীত প্রতিটি কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন। বলেন নাগরিক সমাজ সচেতন থাকলে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা অনেকাংশে লাঘব হয় নাগরিক উদ্যোগই তার প্রমাণ। কর্পোরেশনের সীমিত সাধ্য দিয়ে নগরবাসীর সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করতে আমি বদ্ধপরিকর। করোনাভাইরাস নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনই প্রথমে জনগনের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নগরবাসীকে অধিকতর সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন আপনারা বারেবারে সাবান দিয়ে হাত ধৌত করবেন। নিজের আঙ্গিনা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। জনসমাগম এড়িয়ে চলবেন। বিভিন্ন সামাজিক এবং ধর্মীয় সমাবেশ পরিহার করবেন। নিজ নিজ সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করবেন। একমাত্র সচেতনতাই পারে এ ভাইরাস থেকে মুক্তি দিতে।
এ সময় করোনাভাইরাস আতংকে নগরবাসী যেন জ্বর, সর্দি, কাশির চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের চিকিৎসকসহ নগরীর সরকারী, বেসরকারী হাসপাতালের সকল চিকিৎসকের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ সৃষ্টি করে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এর ফলে জলমগ্ন হয়ে পানিতে মশার বংশবৃদ্ধি ঘটছে। তিনি সামনে বর্ষা মৌসুমের পূর্বেই বিভিন্ন এলাকায় সৃষ্ট বাঁধ অপসারণ করার জন্য জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সাথে নিয়োজিত সেবা সংস্থাসমূহের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তিনি যে কোন দূর্যোগ কিংবা ভোগান্তিতে চসিক এর হটলাইন নাম্বার ১৬১০৪ এ যোগাযোগ করার জন্য নগরবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হাজী মোঃ ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, এস এম আবু তাহের, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নাগরিক উদ্যোগের সদস্য সচিব হাজী মোঃ হোসেন, এজাহারুল হক, মোরশেদ আলম, নুরুল কবির, মোঃ শাহজাহান, সমীর মহাজন লিটন, মাহাদী হাসান সনন প্রমুখ।