- ৫৫ নেতার সাথে স্কাইপে সংলাপ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: মহানগর বিএনপির ৫৫ নেতার সাথে স্কাইপে সংলাপ হয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রিয় কার্যালয়ে গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে স্কাইপে সংলাপ। এ সময় তিনি দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত করতে বিগত এক যুগেরও বেশি সময় দলের হাল ধরে রাখা নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ণ, বিশেষ করে মাঠ কর্মীদের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে বলে আভাস দেন।
গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে স্কাইপে বৈঠক।
উপস্থিত নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন, দলকে সুসংহত করা, তৃণমূল নেতাকর্মীদের আরও সক্রিয় করা এবং কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিষয়ে নেতাদের মতামত চাওয়া হয়েছে। শুরুতে তারেক রহমান সবার উদ্দেশে দলের সাংগঠনিক বিষয়ে সূচনা বক্তব্য রাখেন। প্রায় সাত মিনিট বক্তব্য রাখার পর উপস্থিত সকল সদস্যের সাথে আলাদা কথা বলবেন বলে জানিয়ে দেন। এরপর পৃথক একটি কক্ষ থেকে সরাসরি দলের কর্মীদের কথা হয়।
প্রত্যেকের সাথে তিনি ৫ থেকে ১০ মিনিট কথা বলেছেন।
সর্বশেষ মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের সাথে কথা বলেন।
এর আগে সহ-সভাপতি পর্যায়ের নেতা, ১৫ থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, নগর কমিটির তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৩ জন যুগ্ম সম্পাদকের সাথে কথা বলেন।
মহানগর কমিটি গঠনের বিষয়ে আবুল হাশেম বক্কর বলেন, কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় নতুন কমিটি গঠন করতে এক মাস আগে আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের সাথে আলোচনা হয়েছে। মূলত সাংগঠনিক ভিত্তি কিভাবে মজবুত করা যায় সে বিষয়ে সব স্তরের নেতাদের মতামত জানতে চেয়েছেন।
সহসভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, দলকে সুসংহত করতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সকলের মতামত জানতে চেয়েছেন। ৫৪ জন নেতার সাথে পৃথকভাবে কথা বলেছেন। দলকে নতুনভাবে সাজাতে সবার মতামত নিয়ে তিনি সিদ্ধান্ত জানাবেন। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলো ভেঙে দেওয়া এবং দলের দুঃসময়ে সরকারের নির্যাতন নিপীড়নের শিকার নেতাকর্মীদের মূল্যায়নের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ৬ আগস্ট ডা. শাহাদাতকে সভাপতি, আবুল হাশেম বক্করকে সাধারণ সম্পাদক এবং আবু সুফিয়ানকে সহ-সভাপতি করে নগর বিএনপির তিন সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র।
১১ মাস পর ২০১৭ সালের ১০ জুলাই ২৭৬ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
মহানগর বিএনপির আওতায় ১৫ থানা ও ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ড রয়েছে। ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে ৩৯টি ওয়ার্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী এবং ১০ নম্বর কাট্টলী ওয়ার্ড কমিটি সেদিন বিলুপ্ত করা হয়নি। ওইদিন কমিটি গঠনে সম্মেলন করতে ৩১টি ওয়ার্ডে নতুন করে আহ্বায়কদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়া ওই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলন করে কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
সর্বশেষ গত বছরের আগস্ট মাসের শুরুতে থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গের প্রক্রিয়া শুরু করেন শাহাদাত-বক্কর। কিন্তু ২৮ আগস্ট কেন্দ্রের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে যায়। তার আগে পাঁচটি থানা ও ২৮টি ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয়।
গত ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের শীর্ষ পাঁচ নেতার সাথেও ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছিলেন তারেক রহমান। তখন নগর কমিটি পুনর্গঠনের নির্দেশ দিলে বিএনপি নেতারা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পর্যন্ত বর্তমান কমিটির কার্যক্রম বহালের অনুরোধ করলে তাতে সায় দেন। নির্বাচনের পর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন তারেক। বর্তমানে সিটি নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পুনর্বহালে মনোযোগ দিচ্ছে দলের সুপ্রিম হাই কমান্ড।