বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
সেনার শাসন নয়, গণতন্ত্র চাই। এই স্লোগান তুলেই পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। সেই মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়েছে পুলিশ। জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো হয়েছে। সেনা-পুলিশ যৌথ অভিযানে একের পর এক প্রাণ গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের। গতকালই ১০ জন বিক্ষোভকারীদের প্রাণ গিয়েছিল সেনার গুলিতে। আজ খবর এসেছে, একদিনেই সেনা-পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে প্রাণ গেছে ৩৮ জনের।
রক্ত ঝরছে মিয়ানমারের একাধিক শহরে। পথে নেমেছেন ডাক্তার, শিক্ষক, বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরাও। সরকারি কর্মীরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অসহযোগ আন্দোলন চালাচ্ছেন। গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীদের দাবি, সেনার অভ্যুত্থান নয়, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাই লক্ষ্য মায়ানমারের। সেনার অত্যাচার থেকে মুক্তি চায় সাধারণ মানুষ। দেশের এনএলডি নেত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সু চি-সহ আটক নেতানেত্রীদের মুক্তি চেয়েও পথে নেমেছেন সাধারণ মানুষজন।
শহরে শহরে চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন। মায়ানমারের রাজধানী নাইপিডো এবং অন্য বড় শহরগুলি এই মুহূর্তে চলে গিয়েছে সেনার দখলে। রাস্তায় টহল দিচ্ছে বিশাল বাহিনী। ইন্টারনেট ও টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাও সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অহিংস পথে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা সম্পূর্ণ বিপরীত। বিক্ষোভকারীদের থামাতে যথেচ্ছভাবে জলকামান চালাতে দেখা গেছে সেনাবাহিনীকে। বলপ্রয়োগ করেছে সেনা-পুলিশ। সেনা-অভ্যুত্থানের বিরোধী আন্দোলন চলছে প্রায় চার সপ্তাহ ধরে। বিক্ষোভের আঁচ এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে। মায়ানমারের রাজপথ দিনে দিনে রণক্ষেত্রের চেহারা নিচ্ছে। এখনও অবধি প্রতিবাদের যে সমস্ত ছবি ও ভিডিও সামনে এসেছে তাতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়াতে দেখা গিয়েছে আন্দোলনকারীদের।
ম্যান্ডালে, ইয়াঙ্গনের মতো শহর থেকে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর খবর আসছে। পুলিশের ফাটানো কাঁদানে গ্যাসের সেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেকে। গুলি লেগে জখমও বহু। সেনার নিশানায় রয়েছে সাংবাদিকরাও। ইতিমধ্যেই সাতজন সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে। দেশের সাইবার নিরাপত্তাও ভেঙে পড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য এখন সেনার হাতের মুঠোয়। বিক্ষোভকারীদের ওপর নজরদারি চালাতে নামানো হয়েছে ড্রোনও।
উপকূলীয় শহর দাওয়েই থেকে হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী দক্ষিণ-পূর্বে কাচিনের দিকে রওনা দিয়েছে। সেখান থেকে মিছিল যাবে উত্তরে। সে মিছিলে পা মিলিয়েছেন ডাক্তার-নার্সরাও। স্লোগান উঠেছে, “আমরা সেনার শাসন চাই না। এই অপশাসন থেকে আমাদের মুক্ত করা হোক।”