তিমির বনিক
মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজার-৩(রাজনগর-মৌলভীবাজার সদর)আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদের বক্তব্যে এখন সরগরম মৌলভীবাজার। মেডিকেল কলেজ নিয়ে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশনের টকশোতে দেয়া তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। বক্তব্যটি এখন ‘টক অব দ্য’ জেলায় পরিণত হয়েছে। ওই বক্তব্যে তিনি জেলা সদরে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি দৃঢ় কণ্ঠে খোলাসা করেছেন। আর তাতেই মেডিকেল কলেজের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ অনেকটাই প্রকাশ হচ্ছে।
৬ই জুন সংসদে সম্পূরক বাজেট বক্তৃতায় নিজ নির্বাচনী এলাকায় একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার দাবি করেন মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনের এমপি সাবেক চিফ হুইপ ও উপাধ্যক্ষ ড. আব্দুস শহীদ। তিনি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের যৌক্তিকথা দেখিয়ে বলেন, ওখানে ৩৫৮ একর জায়গা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। তাই ওই স্থানে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হলে জায়গা অধিগ্রহণ করে ক্রয় করার প্রয়োজন হবে না।
তার ওই বক্তব্য জেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তার সংসদীয় আসনের লোকজন ছাড়া জেলাজুড়ে ২০১৮ সাল থেকে দেশ ও প্রবাসে থাকা স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা সদরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা বিস্মিত হন। কারণ ওই দাবিতে আন্দোলনের শুরু থেকে দেশ ও বিদেশে (যুক্তরাজ্য) গণস্বাক্ষর, সেমিনার ও গোলটেবিল আলোচনায় তিনি অংশগ্রহণ করে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এরপর সংসদে হঠাৎ তার এমন দাবি জেলাজুড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এরই প্রেক্ষিতে (৯জুন) রাতে যুক্তরাজ্যের একটি টেলিভিশনের টকশোতে মৌলভীবাজার জেলায় মেডিকেল কলেজ দ্রুত বাস্তবায়নে আমাদের করণীয় শীর্ষক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেছার আহমদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন। তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। এ জেলার মানুষ দেশ ও বিদেশে যারা অবস্থান করছেন সবাই চায় মৌলভীবাজার জেলা সদরে মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হোক। প্রধানমন্ত্রীও জানেন আমাদের ২৫০ শয্যা হাসপাতাল আছে। সেটিকেই মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করার কথা। এখানে জানি না কি কারণে কথাটি বলা হয়েছে। আমি নিজেও ঠিক বুঝতে পারছি না। জেলার যে কোনো বড় প্রতিষ্ঠান বা মূল প্রতিষ্ঠান জেলা সদরেই হয়। মেডিকেল কলেজ চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী মৌলভীবাজার সদরেই হবে। সে ব্যাপারে জেলাবাসী কারও কোনো আপত্তি নেই। তিনি আব্দুস শহীদকে ইঙ্গিত করে বলেন, একজন সম্মানীয় ব্যাক্তি জায়গা নিয়ে যে কথা বলেছেন! জেলা সদরে কি জায়গার অভাব পড়েছে? আমি প্রশ্ন রাখতে চাই। জেলা সদর কি সাগরের পানির উপরে। যে ওখানে মেডিকেল কলেজ করা যাবে না। এই অবান্তর কথাগুলো কোনো অবস্থাতেই ঠিক নয়। নেছার আহমদ আরও বলেন, ২৫০ শয্যা হাসাপাতালে ১০ একর জায়গা রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগেরও আরও ৫-৬ একর জায়গা রয়েছে। এ ছাড়া শহরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় হাজার একর সরকারি জায়গা রয়েছে। সুতরাং জেলা সদরে যে জায়গার সমস্যা রয়েছে এমনটি সঠিক নয়।
সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় ওই টকশোতে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক ব্রিটিশ কাউন্সিলর বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব এম এ রহিম (সি.আই.পি), মৌলভীবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজ চাই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড হোয়াটসঅ্যাপ ক্যাম্পেইন গ্রুপের এডমিন বিশিষ্ট কমিউনিটি লিডার মোহাম্মদ মকিস মনসুর. যুক্তরাজ্য জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান মিয়া, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কাউন্সিলর মুজিবুর রহমান জসিম ও এস করিম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম সাব্বির করিমসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।