বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
‘সরি দিদি, আমাকে যেতে হবে’, এটাই ছিল তার শেষ কথা। উদ্ধার হয়েছে ১৭ বছরের নাবালিকার দেহ। ভারতের বিশাখাপত্তনমের একটি কলেজের ওপরতলা থেকে কিশোরীর লাফ দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্তে পুলিশ।
একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। মৃতার বয়ান অনুযায়ী, সে যৌন হেনস্থার শিকার। পুলিশে অভিযোগ করলে নগ্ন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটটিতে মৃতা তার পরিবার সহ তার অন্তঃসত্ত্বা দিদিকে লিখেছে, ‘সরি দিদি, আমাকে যেতে হবে। এই হস্টেলের ভিতরেই কিছু ছেলে যৌন হেনস্থা করেছে। অনেক বন্ধুরাও যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছে। তোমরা আমাকে নিয়ে টেনশন করো না, আমি বোঝাতে পারব না, আমি কেন চলে যাচ্ছি। আমাকে ভুলে যেও।
মা-বাবা আমি তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। তোমরা আমাকে জন্ম দিয়ে এই দুনিয়াতে এনেছ, বড় করেছে তার জন্য আমি তোমাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কিন্তু আমার জীবনের অধ্যায় শেষ। মৃতা তার অন্তঃসত্ত্বা দিদিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ছোট বোনকে সুন্দরভাবে পড়াশোনা করে ভবিষ্যৎ তৈরি করতে বলেছে। নিজের মতো অন্যদের দ্বারা বিভ্রান্ত হতে বারণ করে সব সময় সুখী ও ভালো থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
মৃতা লিখেছে, কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হত না। কারণ আমার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। দিদির উদ্দেশে মৃতার বক্তব্য, আমি চলে গেলে তোমাদের কয়েকটা বছর কষ্ট হবে, তার পরে তোমরা একদিন আমাকে ভুলে যাবে। কিন্তু আমি যদি তোমাদের চোখের সামনে থাকি, তাহলে তোমাদের আরও খারাপ লাগবে।’
বিশাখাপত্তনমের এক পলিটেকনিক কলেজের ছাত্রী ছিল ওই কিশোরী। রাত ১০টা নাগাদ হস্টেল কর্তৃপক্ষ ফোন করে তার পরিবারকে জানায়, মেয়েটি নিরুদ্দেশ। খবর পেয়ে তার বাড়ি থেকেও ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। পরে রাত ১২টা ৫০ মিনিট নাগাদ মেয়েটি তার বাড়িতে মেসেজ করে। মেসেজ পেয়ে বাড়ির লোক অস্থির হয়ে পড়ে।
কিশোরীর বাবার কথায়, ‘আমি জানতে চাই কেন আমার মেয়ে এইভাবে চলে গেল। আমি ওকে অনেক ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছি। দশম শ্রেণির পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করেছিল। অনেক আশা নিয়ে এখানে ভর্তি করেছিলাম।”
ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ‘কোনও ছেলেই মেয়েদের হস্টেলে যেতে পারে না। সেখানে মহিলা ওয়ার্ডেনরা রয়েছেন। যৌন নির্যাতনের কোনও সম্ভাবনাই নেই।”
পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত পড়ুয়া ও পুরুষ কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।